সুষমা রায় ছিলেন ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনের বিপ্লবী কর্মী

সুষমা রায় ছিলেন ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনের রাজনৈতিক কর্মী, সাহিত্য পত্রিকার সম্পাদক। রাজনৈতিক কারণে বাংলার বিভিন্ন জেলাতে ছাত্র আন্দোলনের কাজ করেছিলেন। জেলে যেতে হয়েছিলো ‘ভারত ছাড়ো’ আন্দোলনের যুক্ত থাকার জন্য। ইংরেজের নির্যাতনের পিছপা হননি, জেল থেকে মুক্তি পাওয়ার পরেও কাজ চালিয়ে গিয়েছিলেন।

সুষমা রায়-এর শৈশব ও পরিবার

সুষমা রায় জন্মগ্রহণ করেছিলেন ১৯২৩ সালে ফরিদপুর জেলার উলপুর গ্রামে। নির্মল রায় ছিলেন তাঁর দিদি। তাঁর পিতার নাম মনোরঞ্জন রায়। ১৯৪৬ সালে কবি নীরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তীর সঙ্গে তার বিবাহ হয়। সুষমার পিতা যদিও গ্রামের একজন জমিদার ছিলেন কিন্তু তিনি বিপ্লবী দলের সভ্য ছিলেন এবং বিপ্লবী কর্মের জন্য তাঁকে দৌলতপুর কলেজ থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।

শিক্ষাজীবন

পরিবার থেকে রাজনৈতিক জ্ঞান পেয়েছিলেন। পড়ালেখার পাশাপাশি সাংগঠনিক কাজ করতেন। সুষমা রায় ম্যাট্রিক পাস করে কলিকাতায় কলেজে পড়তে আসেন। তারপরে আবার কাজ শুরু করেন।

সুষমা রায়-এর রাজনীতির প্রতি আকর্ষণ

বিদেশী শাসকদের হাতে পিতার বন্দীজীবনের নির্যাতনের কাহিনী তিনি ছোট বেলা থেকে জ্ঞান হওয়া অবধি শুনছেন এবং তাঁদের মন বিদেশী শাসকদের বিরুদ্ধে বিষিয়ে উঠত। মায়ের কাছে পিতার কথা শুনে, তার উদার আদর্শের প্রতি তারা আকৃষ্ট হতেন। আর একটু বড়ো হয়ে চোখের সামনে প্রজাদের প্রতি পিতার স্নেহ ও উদার আচরণে তারা মুগ্ধ হয়ে যেতেন। ভাবতেন বড়ো হয়ে ওদের দুঃখকষ্ট দূর না করতে পারলে জীবনের সার্থকতাই নেই।

ইউটিউবে দেখুন আমার লেনিন তথ্যচিত্র

সরাসরি রাজনীতিতে যুক্ততা

সেই সময় ছাত্র-ফেডারেশনের সঙ্গে তার যোগাযোগ ঘটে। তারপর তিনি পাটনা, খুলনা, রাজশাহী ইত্যাদি স্থানে ফেডারেশনের সম্মেলনে যোগদান করেন। এদিকে তিনি কলিকাতায় বিভিন্ন কলেজে ছাত্র-সংগঠনের কাজ করতে থাকেন। এই সময়ে তিনি আর.এস.পি.র সংস্পর্শে আসেন। তাদের নির্দেশ অনুযায়ী তিনি বিভিন্ন বস্তিতে কাজ করেন। আগস্ট-আন্দোলনে সক্রিয় অংশগ্রহণ করাতে ১৯৪২ সালে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। তিনি প্রথমে প্রেসিডেন্সি জেলে নিরাপত্তা-বন্দীরূপে আটক থাকেন এবং পরে বছরখানেক নিজ গ্রামে স্বগৃহে অন্তরীণ থাকেন। ১৯৪৫ সালে তিনি মুক্তি পান। ১৯৪৫ এবং ১৯৪৬ সালে ভারতবর্ষে যে ব্যাপক গণ-আন্দোলন ও ছাত্র-বিক্ষোভ দেখা দেয় তাতে তিনি অংশগ্রহণ করেন। ১৯৪৬ সালে ছাত্রদের মুখপত্র ‘শ্রীহর্ষ’ পত্রিকার সম্পাদনার ভার তিনি গ্রহণ করেন।

আরো পড়ুন

তথ্যসূত্র:

১. কমলা দাশগুপ্ত (জানুয়ারি ২০১৫)। স্বাধীনতা সংগ্রামে বাংলার নারী, অগ্নিযুগ গ্রন্থমালা ৯। কলকাতা: র‍্যাডিক্যাল ইম্প্রেশন। পৃষ্ঠা ২২৪-২২৫। আইএসবিএন 978-81-85459-82-0

Leave a Comment

error: Content is protected !!