সুনীতি চৌধুরী (ঘোষ ) ছিলেন ভারতীয় উপমহাদেশের ব্রিটিশ বিরোধী স্বাধীনতা আন্দোলনের একজন ব্যক্তিত্ব ও অগ্নিযুগের নারী বিপ্লবী। তিনি ছিলেন কুমিল্লায় জন্মগ্রহণ করা বিপ্লবী। নিরীহ-দুঃস্থদের জন্য নানা সেবামূলক কাজ করেছেন। তিনি ডাক্তার ছিলেন ও মেয়েদের রাজনীতি, অর্থনীতি, সম্পর্কে জ্ঞানী করে তোলার জন্য সাংগঠনিক কাজ করেছেন। তিনি যুগান্তর দলের সাথে যুক্ত ছিলেন। ১৯৩২ থেকে ১৯৩৯ সাল পর্যন্ত সাত বছর কারাবন্দী ছিলেন। কারামুক্ত হওয়ার পরেও রাজনৈতিক কাজ করেছেন বিভিন্ন ভাবে।[১]
জন্ম ও পরিবার:
১৯১৭ সালের ২২শে মে (১ই জ্যৈষ্ঠ) সুনীতি চৌধুরী জন্মগ্রহণ করেন কুমিল্লায়। তাঁর পিতৃভূমি ছিল ত্রিপুরা জেলার নবীনগর থানার মধ্যে ইব্রাহিমপুর গ্রামে। তার পিতা উমাচরণ চৌধুরী ও মাতা সুরসুন্দরী দেবী। ১২ বা ১৩ বছর বয়স থেকেই সুনীতির মনে ইংরেজ বিদ্বেষ জেগে উঠেছিল। কুমিল্লার বিপ্লবী উল্লাসকর দত্তের যাবজ্জীবন দ্বীপান্তর ও তাঁদের বিপ্লবী জীবনের মর্মন্তুদ কাহিনী তিনি বিস্মিত হয়ে শুতেন এবং তাঁদের কথা আরো জানবার জন্য কৌতুহলী হয়ে উঠতেন। তাঁর দাদারা ছিলেন রাজনৈতিক কর্মী।
শিক্ষা ও বৈবাহিক জীবন:
সুনীতি কুমিল্লার ফৈজন্নেসা গার্লস স্কুলের ছাত্রী ছিলেন। তাঁর সহপাঠী ছিলো শান্তি ও প্রফুল্লনলিনী ব্রহ্ম। প্রফুল্লনলিনী ‘যুগান্তর’ নামে বিপ্লবী দলের সভ্য ছিলেন। শান্তি ও সুনীতির তেজস্বিতা প্রফুল্লকে আকৃষ্ট করে। প্রফুল্ল তাঁদের প্রভাবান্বিত করেন এবং দলের নেতাদের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেন। শান্তি ও সুনীতি দলের উৎসাহী কর্মী হয়ে ওঠেন। নানা স্বদেশী বই পড়তে পড়তে তাঁদের মন আরো চঞ্চল ও প্রস্তুত হয়ে উঠতে থাকে। এরই সাথে স্বদেশী কাজের সাথে যুক্ত হতে থাকেন ও বিপ্লবী কাজে নিজেকে নিয়োজিত করতে থাকেন।
১৯৩১ সালে ১৪ই ডিসেম্বর কুমিল্লা জেলা ম্যাজিস্ট্রেট স্টিভেন্সকে গুলি করায় যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হয়। ১৯৩৯ সালে মুক্তির পর শান্তি ও সুনীতি পড়াশুনা করতে থাকেন। দুজনেই ম্যাট্রিক পাস করলেন। তারপর শান্তি পাস করেন আই.এ.; সুনীতি আই.এস.সি। সুনীতি এম.বি. পাস করে ডাক্তার হন। ডাক্তাররূপে তিনি নীরবে সেবা করে চলেছেন কত দুঃস্থ ও পীড়িত মানবের। ১৯৪৭ সালে সুনীতির বিবাহ হয় চব্বিশ-পরগনার প্রদ্যোতকুমার ঘোষের সঙ্গে।
সুনীতি চৌধুরী-এর রাজনৈতিক কাজ:
১৯৩০ সালে কুমিল্লায় চলেছিল ‘আইন অমান্য আন্দোলন’। জনতার উপরে ইংরেজের অত্যাচার কুমিল্লার সমস্ত কিশোর ও যুবমনকে প্রচণ্ড একটা ঘা দিয়ে ফিরছিল। তার ঢেউ এসে ধাক্কা দিতে লাগল শান্তি, সুনীতি, প্রফুল্প প্রভৃতিকেও। তাঁদের মনে হতো ইংরেজ তাড়াতে পারলে তবেই আসবে আমাদের দেশের মঙ্গল। শোভাযাত্রার উপরে লাঠিচার্জের ফলে কর্মীদের রক্তাক্ত ও ক্ষতবিক্ষত দেহ দেখে তাদের মন বিদ্রোহী হয়ে উঠত।
তাঁরা চমৎকার লাঠি ও ছোরা খেলা শিখে নিলেন। তারপর অভ্যাস করতে লাগলেন রিভলভার চালানোর; এজন্য যেতে হতো ময়নামতী পাহাড়ে। পাড়ায় পাড়ায় লাঠি, ছোরা খেলা শেখাবার ও বিপ্লবাত্মক পুস্তক পড়ার মধ্য দিয়ে তাঁরা সংগঠন করে চলেছিলেন। উৎসাহের একটা নতুন জোয়ারে ছোট কুমিল্লা শহর তখন জীবন্ত।
১৯৩১ সালের প্রথমার্ধে কুমিল্লায় ছাত্র-কনফারেন্স অনুষ্ঠিত হয়। সেই অনুষ্ঠানে গড়ে তুলেছিলেন ‘ছাত্রীসংঘ’। প্রফুল্পনলিনী ব্রহ্ম তার সভানেত্রী, শান্তি ঘোষ সম্পাদিকা এবং সুনীতি চৌধুরী ক্যাপটেন। ছাত্রীসংঘে প্রায় ৪০ থেকে ৬০ জন ছাত্রীকে ক্যাপটেন সুনীতি শেখাতেন ড্রিল ও প্যারেড। এই ছাত্রীরা ছিলেন ছাত্র-কনফারেন্সেরে সুশৃঙ্খল ও নিয়মানুগ স্বেচ্ছাসেবিকা।
ইতিমধ্যে প্রফুল্ল, শান্তি, সুনীতি শুনেছেন বিপ্লবীদের অনুষ্ঠিত গার্লিক হত্যা, সিম্পসন হত্যার ঘটনাবলী। প্রফুল্ল ও শান্তি ভাবলেন তারাও কেন করবেন না? দলের নেতাদের কাছে প্রফুল্ল ও শান্তি কিছু একটা বিপ্লবী কাজ করবার জন্য বারবার তাগিদ দিতে থাকেন।
দলে নেতারা অবশেষে এই সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন যে, শান্তি ও সুনীতি কুমিল্লা জেলা ম্যাজিস্ট্রেট স্টিভেন্সকে গুলী করে বৃটিশ গভর্নমেন্টকে চরম আঘাত হানবেন। দলের পুরাতন কর্মী হিসাবে প্রতিষ্ঠানের প্রয়োজনে প্রধান থাকবেন বাইরে । দরকার হলে তিনি আত্মগোপন করে কাজ করে যাবেন। তার বাইরে থাকা তখন বেশী প্রয়োজন ছিলো। আরো স্থির হয় যে, শান্তি ও সুনীতি একটা দরখাস্ত দেবার অজুহাতে জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের বাংলোতে গিয়ে কাজ হাসিল করবেন।
স্টিভেন্সকে হত্যার চেষ্টা:
১৯৩১ সালে ১৪ই ডিসেম্বর সকালে শান্তি প্রস্তুত হয়ে বসে আছেন এমন সময় একটা ঘোড়ার গাড়ী এলো দলের দাদাদের নির্দেশমতো। শান্তি গাড়িতে উঠে বসলেন। গাড়ীতে ছিলেন সুনীতি। তাঁদের গাড়ী গিয়ে ঢুকলো জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের কুঠিতে। চাপরাসীর হাতে তাঁর ইণ্টারভিউ-কার্ড পাঠিয়ে দিলেন। ম্যাজিস্ট্রেট স্টিভেন্স বেরিয়ে এলেন। দায়িত্ব পালনের সুযোগ সমাগত দেখে শান্তি ও সুনীতি গুলি ছুড়লেন। ম্যাজিস্ট্রেটের প্রাণহীন দেহ ভূলুণ্ঠিত হলো। শান্তি দেখলেন সমস্ত ঘরটাতে চলেছে ছুটোছুটি দাপাদাপি এবং বিকট চীৎকার। সুনীতিকে মাটিতে ফেলে দিয়ে দুজন লোকে তাঁকে জাপটে ধরেছে রিভলভারটা কেড়ে নিতে।
শান্তিকে পেছন থেকে একজন লোক শক্ত করে ধরে রয়েছে, আরেকজন শান্তির রিভলভার শুদ্ধ হাতটা চেপে ধরেছে। অশ্রাব্য ভাষায় তাঁকে গালাগালি করছে। চাপরাসীরা তাঁদের কিল, চড়, লাথি, ঘুষি মারছে। পুলিশ-লাইনের সামনে পাগলা-ঘটি বেজে উঠল। মুহুর্তের মধ্যে পুলিশ এসে সব ঘিরে ফেলল ; শান্তি-সুনীতির হাত পেছনে বেঁধে দিয়ে তাদের বেদম প্রহার করতে লাগল। এমন সময় ডি.আই.বি. ইন্সপেক্টার এসে প্রহারের হাত থেকে উদ্ধার করে তাঁদের দুজনকে দুই জায়গায় সরিয়ে দেয়। জেরা চলে আলাদা আলাদা ভাবে। গুপ্তকথা পুলিশ কিছুই আদায় করতে পারেনি।
জেলখানার জীবন:
পুলিশ প্রথমে তাদের নিয়ে যায় কুমিল্লা জেলে। পরদিন বন্দী হয়ে এলেন সেখানে প্রফুলিনলিনী ব্রাহ্ম ও চট্টগ্রামের ইন্দুমতী সিংহ। চট্টগ্রামে অনন্ত সিংহের ভগ্নী ইন্দুমতী সিংহ তখন চট্টগ্রাম অস্ত্রাগার লুণ্ঠন মামলার অর্থসংগ্রহের জন্য কুমিল্লায় এসেছিলেন।
কয়েকদিন পরে শান্তি-সুনীতিকে নিয়ে আসা হয় কলিকাতার আলিপুর সেন্ট্রাল জেলে। মামলা শুরু হয় ১৯৩২ সালের ১৮ই জানুয়ারি। মামলার সময় শান্তি ও সুনীতি তাদের হাসি, উচ্ছ্বাস ও তেজস্বীতায় সমস্ত কোর্টকে মুগ্ধ করে রেখেছিলেন। মামলা দ্বিতীয় দিনে ডকে তাঁদের বসতে চেয়ার দেওয়া হয়নি বলে তারা পিছন ফিরে দাঁড়িয়ে রইলেন। তারপর থেকে শেষদিন পর্যন্ত ডকে তাদের চোয়ার দেওয়া হয়েছিল।
অবশেষে ১৯৩২ সালের ২৭শে জানুয়ারি শান্তি-সুনীতি সমগ্র সত্তা কেন্দ্রীভূত করে যখন অপেক্ষা করছিলেন ফাঁসির আদেশ শুনবার জন্য ঠিক তখন তারা দণ্ডাদেশ শুনলেন যাবজ্জীবন দ্বীপান্তরের। অফুরন্তু উৎসাহভরা প্রাণ তাঁদের সেই মুহূর্তে নিরাশ হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু তারা যে ১৪ ও ১৫ বছরের কিশোরী নাবালিকা। স্কুলের অষ্টম শ্রেণীর ছাত্রী। ফাঁসি কি করে হবে?
এই দুটি কিশোরী মেয়ের বৈপ্লবিক কর্মকাণ্ড বাংলাদেশের বুকে যে আলোড়নের সৃষ্টি করেছিল তা তখনকার দিনের লোক আজও হয়তো ভুলে যাননি। যে বাংলাদেশের নারী-সমাজ শত লাঞ্ছনাও মুখ বুজে সহ্য করেন, শত আঘাতেও নীরবে অশ্রুপাত করেন কিন্তু প্রত্যাঘাত করার কথা মনে আনেন না, সেই সমাজের দুটি কিশোরীর একি রণরঙ্গিণী মুর্তি। দ্বিধাগ্রস্তের মনে সেদিন দৃঢ়তা জাগলো। যুবসমাজের চিত্তে জাগলো চমক, উৎসাহে উদ্দীপনায় তারা দুঃসাহসের পথে পা বাড়াতে প্রস্তুত। ছোট্ট দুটি মেয়ে যেন ধুমকেতুর মতো সমগ্র দেশকে তোলপাড় করে দিয়ে গোটা সমাজের হয়ে শান্তি বহন করতে কারান্তরালে চলে গেলেন দেশবাসীকে চাঞ্চল্যে ও বিস্ময়ে হতবাক করে দিয়ে।
শান্তিকে করা হয় দ্বিতীয় শ্রেণীর কয়েদী, সুনীতিকে তৃতীয় শ্রেণীর। তাদের বিচ্ছিন্ন করে শাসন করা হচ্ছে ইংরেজের নীতিতে। শান্তি ও সুনীতিকে মাঝে মাঝে একসঙ্গে রাখে কিন্তু অধিকাংশ সময়ই আলাদা আলাদা করে প্রেসিডেন্সি, মেদিনীপুর, রাজশাহী, হিজলী প্রভৃতি জেলে ঘুরিয়ে ফিরিয়ে স্থানান্তরিত করা হত।
যখন তারা মেদিনীপুর জেলে ছিলেন তখন সেখানকার জেলার ও মেট্রনের অনাচারের বিরুদ্ধে শান্তি, সুনীতি ও বীণা দাস অনশন করেছিলেন সাতদিন। ফলে জেলারকে ওখান থেকে বদলি করা হয়। কিন্তু এই বন্দিনীদেরও পৃথক পৃথক জেলে স্থানান্তরিত করা হয়। শান্তি ও বীণা গেলেন হিজলী জেলে, যেখানে ছিলেন বিনা বিচারে বন্দী রাজবন্দী মহিলাগণ। সুনীতিকে নিয়ে যায় রাজশাহী জেলে। শান্তি সুনীতি যেখানেই যখন গেছেন, তাদের চমৎকার কণ্ঠসঙ্গীতে অন্যসকল মাতিয়ে রাখতেন।
জেলজীবনের করুণ পরিণতি:
মেদিনীপুর জেলে থাকতেই সুনীতিকে তৃতীয় শ্রেণীর কয়েদী করা হয়। কারাজীবনের মর্মান্তিক শাস্তি হচ্ছে তৃতীয় শ্রেণীর বন্দী জীবন যাপন করা। তৃতীয় শ্রেণীর বন্দীর প্রতি ছিল সর্বপ্রকার অসম্মানজনক ব্যবহার। কুর্ত ও শাড়ী যে একেবাবে চটের মতো মোটা হতে পারে তা তখনকার দিনেব তৃতীয়শ্রেণীর কয়েদী ভিন্ন অন্যরা জানে না। তৃতীয় শ্রেনির খাদ্য সাধারণ লোকের কল্পনার বাইবে। কী শক্ত আর মোটা ভাত। সেগুলি চিবোতে না পারলেও গিলতেই হবে। বালতি-ভর্তি হলুদ রঙের জল— তাব নাম ডাল। কী ভাল সেটা বোঝা যায় না। তাতে আবার এমন কাঁচাকাঁচা গন্ধ যে, খেতে গিয়ে মনে হয় যেন সদ্য ক্ষেত থেকে কাচা ডাল অসময়ে তুলে এনেছে। আর তরকারি বিষাদ ঘ্যাঁটটা গলা দিয়ে যাবার সময় গলার মধ্যে কেমন একটা ঘ্যাঙডানিব কষ্ট হয়, কেমন খুসখুস করে। এই হচ্ছে ইংরেজ আমলের তৃতীয় শ্রেণীর বন্দীদের জন্য খাদ্যে রূপ। অতি দরিদ্রের বাড়ির ডালভাতও এর চেয়ে অমৃত। তা ছাড়া তৃতীয় শ্রেণীর বন্দী পাবে একখানা মাত্র বই। কাবাজীবনে কখনো অল্পদিনের জন্য অশ্যাঙ্ক রাজনৈতিক কযেদীদেব সঙ্গে সুনীতি চৌধুরীকে রাখা হয়েছিল, কিন্তু অধিকাংশ সময় শুধুই সাধারণ কযেদীরা ছিল তার সঙ্গী, অর্থাৎ প্রায় নিঃসঙ্গ ছিলেন তিনি। তৃতীয় শ্রেণীর বন্দীজীবনে তার উপর অপমানকর অন্যান্য উৎপীড়নেও অন্ত ছিল না।
পরিবারের উপর পুলিশের নির্যাতন:
সুনীতির বাড়িটাকে ধ্বংস করবার উদ্দেশ্যে ইংরেজ গভর্নমেন্ট তাঁদের পরিবারকে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দিতে নানা চেষ্ঠা চালায়। সুনীতির বাবার পেনসান বন্ধ করে দিয়। সুনীতির দুই দাদাকে গ্রেপ্তার ও বন্দী করল। তাঁর পিতামাতা ছোট ছোট সন্তানদের নিয়ে উপবাসের মুখে পড়ে গেলেন।
আত্মীয়স্বজনের সাহায্য করতে গেলে পুলিশ তাঁদের নির্যাতন করতে আরম্ভ করে। তাই তাঁরা সাহায্য বন্ধ করলেন। সুনীতির ছোট ভাই আর্থিক সঙ্গতির চেষ্টা করতে গিয়ে অত্যন্ত ক্লিষ্ট জীবন যাপন করবার ফলে যক্ষ্মাতে মৃত্যুবরণ করেন। এর উপরে বাড়ীতে পুলিসের অত্যাচারের অবধি ছিল না। বাড়ীর এই নিদারুণ দুঃখের কথা সুনীতি জেলে থাকাবস্থায় সবই জানলেন, কিন্তু দুঃখের বজ্রাঘাতে মাথা নত করবেন সুনীতি কোনো সাধারণ মেয়ে ছিলেন না। অন্য ধাতু দিয়ে গড়া এ-মেয়ে। ভারতের উজ্জ্বল এক রত্ন তৃতীয় শ্রেণীর কয়েদীরূপে বাংলার কারাগারে সকলের অজ্ঞাতে ভস্মে আচ্ছাদিত রইলেন।
সাধারণ জীবন যে কতো অসাধারণরূপে ফুটে উঠতে পারে কত ‘স্থিতধী’ হতে পারে তা দেখা যায় সুনীতির মতো মেয়ের মধ্যে। কারাপ্রাচীরের দুর্ভেদ্য লৌহবর্ষের মধ্যে শান্তি ও সুনীতি কাটিয়ে দিলেন সাতটা শীত ও বসন্ত। অবশেষে গান্ধীজীর প্রচেষ্টায় অন্যসকল রাজনৈতিক বন্দির সঙ্গে তাদেরও মুক্তির আদেশ আসে ১৯৩৯ সালের এক প্রাতে।
মৃত্যু:
সুনীতি চৌধুরী মারা যান ১২ জানুয়ারি, ১৯৮৮ সালে। তিনি সবসময় মানুষের কল্যাণে জীবনকে কাজে লাগিয়েছেন।
তথ্যসূত্র:
১. দোলন প্রভা, ৭ আগস্ট , ২০১৯, “সুনীতি চৌধুরী ভারতের ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনের উজ্জ্বল নক্ষত্র”, রোদ্দুরে ডট কম, ঢাকা, ইউআরএলঃ https://www.roddure.com/biography/suniti-choudhury/
২. কমলা দাশগুপ্ত (জানুয়ারি ২০১৫)। স্বাধীনতা সংগ্রামে বাংলার নারী, অগ্নিযুগ গ্রন্থমালা ৯। কলকাতা: র্যাডিক্যাল ইম্প্রেশন। পৃষ্ঠা ১১৩-১১৮ আইএসবিএন 978-81-85459-82-0।
দোলন প্রভা বাংলাদেশের একজন কবি, লেখক, প্রাবন্ধিক, সম্পাদক ও উইকিপিডিয়ান। তাঁর প্রকাশিত প্রথম কবিতাগ্রন্থ “স্বপ্নের পাখিরা ওড়ে যৌথ খামারে” এবং যুগ্মভাবে সম্পাদিত বই “শাহেরা খাতুন স্মারক গ্রন্থ”। তার জন্ম ৮ জানুয়ারি ১৯৮৯ তারিখে বাংলাদেশের দিনাজপুর জেলার পার্বতীপুর উপজেলার রেলওয়ে নিউ কলোনিতে। বাংলা ভাষা ও সাহিত্যে বাংলাদেশের আনন্দমোহন কলেজ থেকে এমএ সম্পন্ন করেছেন। তিনি ফুলকিবাজ এবং রোদ্দুরে ডটকমের সম্পাদক।