এনামূল হক পলাশ একজন লেখক, কবি ও প্রাবন্ধিক

এনামূল হক পলাশ বাংলাদেশের একজন লেখক, কবি, প্রাবন্ধিক, গল্পকার, শিশু সাহিত্যিক এবং সংগঠক। তিনি অন্তরাশ্রম নামে একটি পত্রিকা সম্পাদনা করেন। তিনি ১৯৭৭ সালের ২৬ জুন নেত্রকোনা জেলার বারহাট্টা উপজেলার বাদে চিরাম গ্রামে মাতুলালয়ে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতার নাম এমদাদুল হক ও মাতার নাম নুরুন নাহার হক। তাঁর পৈত্রিক নিবাস একই উপজেলার বামনগাঁও গ্রামে।

 বারহাট্টা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে ১৯৮৮ সালে প্রাথমিক শিক্ষা সমাপ্ত করেন। বারহাট্টা সি.কে.পি. পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ে তিনি মাধ্যমিক শিক্ষা শুরু করে ১৯৯৪ সালে বিজ্ঞান শাখায় প্রথম বিভাগে এসএসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় ইন্টারমিডিয়েট কলেজে তিনি উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা শুরু করে ১৯৯৬ সালে প্রথম বিভাগে এইচএসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। ১৯৯৭ সালে সরকারি তিতুমীর কলেজে উদ্ভিদ বিজ্ঞানে স্নাতক সম্মানে ভর্তি হন। ১৯৯৮ সালে তিনি টিসি নিয়ে নেত্রকোনা সরকারি কলেজে চলে আসেন এবং একই কলেজ থেকে ২০০২ সালে দ্বিতীয় শ্রেনীতে স্মাতক সন্মান উত্তীর্ণ হন। ২০০৪ সালে গুরু দয়াল সরকারি কলেজে থেকে উদ্ভিদ বিদ্যায় দ্বিতীয় শ্রেনীতে মাস্টার্স পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। ছাত্রাবস্থায় ১৯৯৮ সালে প্রগতিশীল বামপন্থী বিপ্লবী রাজনীতিতে জড়িয়ে পড়েন।

১৯৯৮ সাল থেকে ২০০৩ সাল পর্যন্ত তিনি বিভিন্ন সময় কয়েকটি জাতীয় ও স্থানীয় দৈনিক পত্রিকার সাথে যুক্ত থেকে সাংবাদিকতা করেছেন। তাঁর প্রকাশিত কাব্য গ্রন্থগুলো হচ্ছে অস্তিত্বের জন্য যুদ্ধ চাই, জীবন এক মায়াবী ভ্রমণ, অন্ধ সময়ের ডানা, অন্তরাশ্রম, মেঘের সন্ন্যাস, পাপের শহরে, জল ও হিজল, অখন্ড জীবনের পাঠ, মু-আল্লাক্বা, ইমরুল কায়েসের কবিতা সহকবিতা, গল্প, অনুবাদ ও গবেষণা গ্রন্থসহ মোট ১৬টি বই লিখেছেন।

ঋত্বিক ঘটকের একটি তথ্যচিত্র দেখুন

কবি, লেখক ও সংস্কৃতি কর্মীদের ব্যবহারের জন্য তিনি নেত্রকোনা শহরের মালনী এলাকায় ২০১৭ সালে গড়ে তুলেছেন অন্তরাশ্রম নামে একটি প্রতিষ্ঠান। বিভিন্ন সাহিত্য আড্ডা, অসহায় মানুষদের সহায়তা, শীতার্ত মানুষদের শীতবস্ত্র বিতরণের মধ্যে প্রথম দিকে এই প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম সীমাবদ্ধ ছিলো। মানুষের মধ্যে সাম্প্রদায়িকতা বিরোধী চেতনা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে কবি এনামূল হক পলাশ এসময় স্কুল অফ মোরাল সাইন্স নামের একটি প্রতিষ্ঠান কল্পনা করেন যেটি অন্তরাশ্রম নামে নেত্রকোণায় পরিচিত হয়। কবি এনামূল হক পলাশ এই প্রতিষ্ঠানের আচার্য্য হিসেবে দায়িত্ব নেন। সেই সাথে তিনি একই নামে একটি সাহিত্যের ছোট কাগজ প্রকাশ করেন।

অন্তরাশ্রম একটি প্রতিষ্ঠান যেটি বিশ্ববীক্ষায় দীক্ষিত।  আন্তর্জাতিকতাবাদকে ধারণ করে সাম্রাজ্যবাদ ও সামন্তবাদ বিরোধী অবস্থানকে অন্তরাশ্রম সব সময় শ্রদ্ধার চোখে দেখে। এই ধারণাকে সামনে রেখে এই প্রতিষ্ঠান থেকে একই নামে অর্থাৎ অন্তরাশ্রম নামে একটি সাহিত্য পত্রিকা বের করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। এর প্রেক্ষিতে ইংরেজি ২০১৮ সালের আগস্ট বাংলা ১৪২৫ সালের ভাদ্র মাসে এর প্রথম সংখ্যাটি প্রকাশিত হয়। পরবর্তীতে ইংরেজি ২০১৯ সালের অক্টোবর বাংলা ১৪২৬ সালের আশ্বিন মাসে এর দ্বিতীয় সংখ্যা ও ইংরেজি ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারি বাংলা ১৪২৬ সালের ফাল্গুন মাসে এর তৃতীয় সংখ্যাটি প্রকাশিত হয়। বর্তমানে ইংরেজি ২০২২ সালের ৩০ নভেম্বর বাংলা ১৪২৭ সালের ১৫ অগ্রহায়ণ এর চতুর্থ সংখ্যাটি প্রকাশিত হয়েছে।

অন্তরাশ্রমের মূল স্লোগান হচ্ছে “অনন্ত জীবনের গান গাই”। এটি নিশ্চিত একটি ভাববাদী স্লোগান। অন্তরাশ্রম ভাববাদে দীক্ষিত একটি প্রতিষ্ঠান হলেও বস্তুবাদকে অস্বীকার করলে অন্তরাশ্রমের অস্তিত্ব নেই বললেই চলে এরকমটা মনে করেন অন্তরাশ্রমের আচার্য্য ও সাহিত্য পত্রিকাটির সম্পাদক  কবি এনামূল হক পলাশ।

আরো পড়ুন

Leave a Comment

error: Content is protected !!