অমর্ত্য সেন (ইংরেজি: Amartya Sen; জন্ম: ৩ নভেম্বর ১৯৩৩) হচ্ছেন ভারতের শৌচাগার, অবকাঠামো ও পরিবার উন্নয়নের অর্থনীতিবিদ। ভারত: উন্নয়ন ও বঞ্চনা বইয়ে অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেনের বুকভরা দুঃখ এটা যে ভারতীয়রা এখনো শৌচাগার বা ল্যাট্রিন ব্যবহার করতে পারছে না। তারা গ্রামের উন্মুক্ত ময়দানে শৌচকর্ম করতে প্রতিদিন ভোরবেলা লোটা নিয়ে বেরিয়ে পড়ে। তার বেদনাভারাক্রান্ত হৃদয় মুচড়ে উঠে তাদের ল্যাট্রিন না থাকার জন্য। ল্যাট্রিন থাকলে ভারতের জনগণের উন্নয়নের বন্যা বয়ে যেত। তিনি একই বইয়ে আরো বলছেন, ভারতে মাতৃমৃত্যু আর শিশুমৃত্যুর কারণে উন্নয়ন আগাচ্ছে না।
বাংলাদেশের গাইবান্ধা এবং কুড়িগ্রাম জেলায় মঙ্গা ছিল একটি দীর্ঘদিনের সমস্যা। তো মঙ্গার কারণে আশ্বিন-কার্তিক মাসে লোকজন ঠিকমত খাবার খেতে পেতেন না। সেইসময় ১৯৯০ থেকে ২০১০ সালের মধ্যে উক্ত অঞ্চলের লোকজন একটি কৌতুক তৈরি করেছিলেন ল্যাট্রিন নিয়ে। হয়ত কোনো গরিব লোক গ্রামে একটি আধপাকা ল্যাট্রিন বানালেন। পাশের অভিজ্ঞ প্রতিবেশী তা দেখে বললেন, “ধান বেচে ল্যাট্রিন বানালু, হাগবু কি বাতাস খাইয়া?”
আধুনিক ভারতে দাসপ্রথা একটি স্বাভাবিক ঘটনা। বিহার, উত্তরাখণ্ডসহ বিভিন্ন প্রদেশে প্রতি বছর হাজার হাজার লোকজন খাদ্যের অভাব ও অপুষ্টিতে মারা যান। বিহারে বন্যা হয় প্রতি বছর, ফসল ফলানো যায় না।[১] যারা ঠিকমত খেতে পায় না তারা কীভাবে ল্যাট্রিনে হাগবে, এই গর্দভ অমর্ত্য সেন তা জানেন না।
অমর্ত্য সেন সমাজতান্ত্রিক অর্থনীতি বোঝেন না। তিনি মাও সেতুংয়ের দুই পায়ে চলা নীতি সম্পর্কে কিছু লেখেননি। এখন যেটাকে চীনা উন্নয়ন মডেল বলা হয় সেটা যে আমেরিকান ড্রিমের নকল, সেটা বোঝেন না। চীনা মডেল যে দেং জিয়াও পিংয়ের সংস্কারের পেট থেকে বের হয়ে আসা সাম্রাজ্যবাদী মডেল, সেটা বলেন না।
সবচেয়ে মজার হচ্ছে অমর্ত্য সেন গণতান্ত্রিক বিপ্লবের অর্থনৈতিক কর্মসূচি ইংল্যান্ড এবং ফ্রান্সে কি ছিল সেটাই বোঝেন না। তিনি তাঁর আইডিয়া অফ জাস্টিসে বলছেন, “গণতন্ত্র হচ্ছে সিদ্ধান্ত গ্রহণের একটি প্রক্রিয়া যা আলাপ আলোচনার মাধ্যমে গড়ে উঠে।”
ফ্রান্স ও ইংল্যান্ডে গণতান্ত্রিক অর্থনীতিতে সামন্তবাদকে যুদ্ধের মাধ্যমে উৎখাত করা হয়েছে; একথা বলতে তাঁর বাধছে। গণতন্ত্রকে সামন্তবাদের উচ্ছেদ থেকে না দেখে, জমির উপর কৃষকের মালিকানা প্রতিষ্ঠার সংগ্রাম হিসেবে না দেখে, বাজে বকেছেন এই নোবেল বিজয়ী মহামূর্খ। এইসব না বোঝার ফল হচ্ছে উপমহাদেশে গণশত্রু তিন দল লিগ, কংগ্রেস আর বিজেপি নামক গণতন্ত্রবিরোধী সংগঠনগুলোর বাড়বাড়ন্ত।
তথ্যসূত্র
১. এই বিষয়ে বিস্তারিত পড়ুন অনুপ সাদির প্রবন্ধ, “ভারতে দাসপ্রথা ঐতিহাসিক কাল থেকে শাসকগোষ্ঠীর ধারাবাহিক গণহত্যার চিহ্ন”, ২৬ এপ্রিল ২০২১, ফুলকিবাজ ডট কম, ঢাকা।
অনুপ সাদি বাংলাদেশের একজন লেখক ও গবেষক। তাঁর লেখা ও সম্পাদিত গ্রন্থের সংখ্যা এগারটি। ২০০৪ সালে কবিতা গ্রন্থ প্রকাশের মাধ্যমে তিনি পাঠকের সামনে আবির্ভূত হন। ‘সমাজতন্ত্র’ ও ‘মার্কসবাদ’ তাঁর দুটি পাঠকপ্রিয় প্রবন্ধ গ্রন্থ। সাহিত্য ও রাজনীতি বিষয়ে চিন্তাশীল গবেষণামূলক লেখা তাঁর আগ্রহের বিষয়।