ফ্যাসিবাদবিরোধী সংগ্রাম ও যুক্তফ্রন্ট প্রসঙ্গে

জর্জি দিমিত্রভ
জর্জি দিমিত্রভ

ফ্যাসিবাদের আক্রমণ এবং ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে শ্রমিক শ্রেণির ঐক্য সংগঠনের সংগ্রামে কমিউনিস্ট আন্তর্জাতিকের দায়িত্ব
কমিউনিস্ট আন্তর্জাতিকের সপ্তম বিশ্ব কংগ্রেসে প্রদত্ত প্রধান রিপোর্ট

১. ফ্যাসিবাদ ও শ্রমিক শ্রেণি

কমরেডগণ,

কমিউনিস্ট আন্তর্জাতিকের ষষ্ঠ কংগ্রেসের [১৯২৮ সালে অনুষ্ঠিত] সময়েই, কমিউনিস্ট আন্তর্জাতিক বিশ্বের সর্বহারাদের এক নতুন ফ্যাসিবাদী আক্রমণের আসন্ন প্রস্তুতি সম্পর্কে সতর্ক করে দিয়েছিল এবং তার বিরুদ্ধে সংগ্রামের আহ্বান জানিয়েছিল। ঐ কংগ্রেস উল্লেখ করেছিল যে, “ফ্যাসিবাদী প্রবণতা ও ফ্যাসিবাদী আন্দোলনের বীজ অল্পবিস্তর প্রায় সর্বত্রই দেখা যায়”।

বর্তমানে অর্থনৈতিক সংকটের গভীরতা বৃদ্ধি, পুঁজিবাদের সাধারণ সংকটের তীব্রতা বৃদ্ধি এবং অগণিত মেহনতী জনগণের বিপ্লবী চেতনা সঞ্চারের সঙ্গে সঙ্গে ফ্যাসিবাদ এক ব্যাপক আক্রণের পথ গ্রহণ করেছে। শাসক বুর্জোয়া শ্রেণি আরও বেশি করে ফ্যাসিবাদের মধ্যে উদ্ধারের পথ অনুসন্ধান করছে; উদ্দেশ্য হলো, মেহনতী জনগণের বিরুদ্ধে অসাধারণ অত্যাচারী ক্রিয়াকলাপ শুরু করা, এক সাম্রাজ্যবাদী লুণ্ঠণকারী যুদ্ধের জন্য প্রস্তুতি চালানো, সােভিয়েত ইউনিয়নকে আক্রমণ করা, চীনকে পদানত ও বিভক্ত করা এবং এইভাবে সর্বোপায়ে বিপ্লবকে প্রতিহত করা।

সাম্রাজ্যবাদী চক্রগুলি এই সংকটের সামগ্রিক বোঝাকে মেহনতী জনগণের কাঁধে চাপিয়ে দেয়ার প্রয়াস পাচ্ছে। আর তাই তাদের প্রয়ােজন ফ্যাসিবাদের।

তারা দুর্বল জাতিগুলিকে পদানত করে, ঔপনিবেশিক শোষণকে তীব্র করে এবং যুদ্ধের দ্বারা সমগ্র পৃথিবীকে পুরো ভাগাভাগি করে বাজারের সমস্যার সমাধান করতে চাইছে। আর তাই তাদের প্রয়ােজন ফ্যাসিবাদের।

শ্রমিক ও কৃষকের বিপ্লবী আন্দোলনকে চূর্ণ করে, দুনিয়ার সর্বহারা মানুষের দুর্গ-সােভিয়েত ইউনিয়নের বিরুদ্ধে সামরিক আক্রমণ চালিয়ে তারা বিপ্লবী শক্তিগুলিকে বিকাশের আগেই স্তব্ধ করতে চাইছে। আর সেই কারণেই তাদের প্রয়ােজন ফ্যাসিবাদের।

অনেকগুলি দেশে, বিশেষ করে জার্মানিতে, জনগণ চূড়ান্তভাবে বিপ্লবমুখী হওয়ার আগেই এই সাম্রাজ্যবাদী চক্রগুলি সর্বহারা শ্রেণিকে পাভূত করতে এবং ফ্যাসিবাদী একনায়কত্ব প্রতিষ্ঠা করতে সক্ষম হয়েছে।

কিন্তু ফ্যাসিবাদের জয়লাভের বৈশিষ্ট্য এই যে, এই সাফল্য একদিকে সােশ্যাল ডেমােক্র্যাসীর বুর্জোয়াদের সঙ্গে শ্রেণি সমন্বয়ের বিভেদমূলক নীতির দ্বারা ছত্রভঙ্গ ও পঙ্গু সর্বহারার দুর্বলতার সাক্ষ্য দেয়, আর অপরদিকে বুর্জোয়াদের নিজেদেরই দুর্বলতার পরিচয় দেয়, যারা শ্রমিক শ্রেণির ঐক্যবদ্ধ সংগ্রাম গড়ে ওঠার ভয়ে ভীত, বিপ্লবের ভয়ে ভীত এবং যারা বুর্জোয়া গণতন্ত্র ও সংসদীয় ব্যবস্থার সনাতন পদ্ধতিতে জনগণের উপর নিজেদের একনায়কত্ব বজায় রাখার অবস্থায় আর নেই। … …

ক. ফ্যাসিবাদের শ্রেণি চরিত্র

খ. বিজয়ী ফ্যাসিবাদ জনগণের জন্য কী বহন করে আনে?

গ. ফ্যাসিবাদের জয় কি অনিবার্য?

ঘ. ফ্যাসিবাদ একটি হিংস্র কিন্তু অস্থিতিশীল শক্তি

২. ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে শ্রমিক শ্রেণির যুক্তফ্রন্ট

কমরেডগণ, পুঁজিবাদী দেশগুলির লক্ষ লক্ষ শ্রমিক ও মেহনতি জনগণ প্রশ্ন করে কীভাবে ফ্যাসিবাদের ক্ষমতা দখলকে প্রতিহত করা যায় আর কীভাবেই বা বিজয়ী ফ্যাসিবাদকে উৎখাত করা যায়? কমিউনিস্ট আন্তর্জাতিকের উত্তর হলো: প্রথম কাজ যেটা অবশ্যই করতে হবে, যা থেকে শুরু করতে হবে তা হলো সমগ্র বিশ্বের প্রতিটি দেশের, প্রতিটি অঞ্চলের প্রতিটি জেলায়, প্রতিটি কারখানার শ্রমিকদের ঐক্যবদ্ধ কর্মধারা গড়ে তুলে একটি যুক্তফ্রন্ট গঠন করা। জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পরিসরে সর্বহারা মানুষের ঐক্যবদ্ধ কর্মধারা হচ্ছে সেই শক্তিশালী হাতিয়ার যা শ্রমিক শ্রেণিকে শুধু সার্থক প্রতিরোধ গড়ে তুলতে সক্ষম করে না, উপরন্তু ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে ও শ্রেণিশত্রুর বিরুদ্ধে সার্থক প্রতিআক্রমণ চালাতেও সমর্থ করে।

ক. যুক্তফ্রন্টের গুরুত্ব

খ. যুক্তফ্রন্ট-বিরোধীদের প্রধান যুক্তি

গ. যুক্তফ্রন্টের সারবস্তু ও রূপ

ঘ. ফ্যাসিবাদ-বিরোধী গণফ্রন্ট

ঙ. ট্রেড ইউনিয়ন ঐক্যের জন্য সংগ্রাম

চ. যুক্তফ্রন্ট ও যুবসমাজ

error: Content is protected !!