মধ্যবিত্ত কেন রাজনীতিবিমুখ?

যারা বাংলাদেশের উন্নতি চান, সার্বিক ও সার্বজনীন উন্নতি চান, তাদের কাছে ‘মধ্যবিত্ত কেন রাজনীতিবিমুখ?’ এটা এখন এক গুরুতর প্রশ্ন। এ প্রশ্নের গুরুত্ব যাদের উপলব্ধিতে ধরা দেয়নি, প্রশ্নটি নিয়ে ভাবলে তাদের কাছেও এর গুরুত্ব প্রতিভাত হবে।

মধ্যবিত্ত রাজনীতিবিমুখ, এ কথা সত্য। শ্রমিক-কৃষকও রাজনীতিবিমুখ। পোশাক শিল্পের শ্রমিকরা এক দশকের বেশি সময় ধরে কঠোর আন্দোলন করছেন। এ আন্দোলন তাদের বেতন, সুযোগ-সুবিধা ও অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য, এটা কোনো রাজনৈতিক আন্দোলন নয়। এ আন্দোলনের নেতাদের মধ্যেও প্রকৃতপক্ষে কোনো রাজনৈতিক অনুশীলন কিংবা রাজনৈতিক আকাঙ্ক্ষা নেই। তবে রাজনীতির নামে ভীষণভাবে আগ্রহী ও কর্মতত্পর লোক এ দেশে আছেন, তারাই জনসাধারণের ওপর কর্তৃত্বশীল। তারা হলেন উচ্চশ্রেণীর ধনিক-বণিক, সিভিল সোসাইটির বিশিষ্ট নাগরিক ও এনজিওপতি। সিভিল সোসাইটিগুলোর বিশিষ্ট নাগরিকদের মধ্যে আছেন— ডক্টর-প্রফেসর, জাস্টিস-ব্যারিস্টার, লে. জেনারেল-মেজর জেনারেল, সেক্রেটারি-এডিশনাল সেক্রেটারি। এদের প্রায় সবাই পেশাগত অবস্থান থেকে অবসরপ্রাপ্ত। শোষণমুক্ত সমাজ এবং শ্রেণী-সংগ্রাম ও শ্রমিক শ্রেণীর একনায়কত্ব প্রতিষ্ঠার অভিলাষ নিয়ে রাজনীতির নামে সক্রিয় তরুণ ও প্রবীণ বাংলাদেশে অনেক আছেন; তবে তাদের আন্দোলনের প্রকৃতি রাজনৈতিক নয়। তারা অন্যায়-অবিচার, দুর্নীতি-অনাচার ইত্যাদির প্রতিবাদে আন্দোলন করেন, ফলাফলের কথা ভাবেন না, কখনো কখনো তারা হয়তো কায়েমি স্বার্থবাদী সরকারকে তাদের অভীষ্ট ন্যায়সঙ্গত কাজ করতে বাধ্য করতে চান। আওয়ামী লীগ, বিএনপি, জাতীয় পার্টি, জামায়াতে ইসলামী, ১৪ দলীয় জোট, ১৮ দলীয় জোট ইত্যাদির নেতাকর্মীরা ভীষণভাবে রাজনীতিতে সক্রিয় আছেন। যারা রাজনীতিতে সক্রিয় আছেন, তাদের এবং তাদের দলের জনসম্পৃক্তি নগণ্য। যারা রাজনীতি করেন, যাদের দল আছে, তারা ক্ষমতা ও সম্পত্তি অর্জনে যতটা আগ্রহী, তার তুলনায় জনসমর্থন অর্জনে সামান্যই আগ্রহী। জনসাধারণকে ঘুম পাড়িয়ে রাখারই নানা আয়োজন তারা করে থাকেন। সার্বজনীন কল্যাণে রাজনৈতিক দল এবং রাজনৈতিক নেতাদের চিন্তাভাবনা কম। রাজনীতিকে ব্যক্তিগত সম্পত্তি অর্জনের এবং বিদেশের দালালি করে ব্যক্তিস্বার্থ হাসিলের ব্যবসায়ে পরিণত করা হয়েছে। এই চরিত্রের রাজনীতির কারণেই দেশের ৯০ শতাংশ মানুষ আজ রাজনীতিতে আস্থাহীন, অনীহ।

রাজনীতিতে মধ্যবিত্তের ঔদাসীন্য, অনাগ্রহ ও অনীহার কারণ এটাই। তবে রাজনৈতিক পক্ষ-প্রতিপক্ষের ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়া ও সহিংসতা, দলবাজ লোকদের দৌরাত্ম্য, হিংসা-প্রতিহিংসা, দুর্নীতি ও দুঃশাসন যখন জীবনকে অতিষ্ঠ করে তোলে, তখন তা নিয়ে অরাজনৈতিক আলোচনা হয় এবং প্রতিকার করার জন্য সরকার, রাজনৈতিক দলগুলো ও রাজনৈতিক নেতাদের ওপর চাপ সৃষ্টি করা হয়। এসবের মধ্যে রাজনীতির চরিত্র উন্নত করার কোনো লক্ষ্য থাকে না।

বাংলাদেশের উচ্চশ্রেণী এখন অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক দিক দিয়ে অত্যন্ত শক্তিশালী। দেশের অর্থনীতি, রাজনীতি ও সংস্কৃতির নিয়ামক এখন এ শ্রেণী। এ শ্রেণীতে উত্তীর্ণ হওয়ার তীব্র প্রতিযোগিতা দেখা যায় মধ্যবিত্ত শ্রেণীর উচ্চ ও মধ্য স্তরে। বাংলাদেশে উচ্চশ্রেণী জনসংখ্যার দিক দিয়ে সবচেয়ে ছোট, কিন্তু শক্তির দিক দিয়ে সবচেয়ে বড়। বাংলাদেশের অর্থনীতিবিদদের উচ্চশ্রেণী ও সম্পদ নিয়ে বিশেষ কোনো গবেষণা নেই— তাদের গবেষণা দারিদ্র্য ও দরিদ্রদের নিয়ে। একসময়ে, মনে হয় ১৯৮০-এর দশক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাণিজ্য অনুষদের অধ্যাপক ড. আবদুল্লা ফারুক বাংলাদেশের ৫০ জন শিল্পোদ্যোক্তার উত্থানের তথ্যভিত্তিক বিবরণ দিয়ে একটি ক্ষুদ্র পুস্তক রচনা করেছিলেন। ওই সময় তখনকার সিপিবির অন্যতম নেতা (বর্তমানে প্রথম আলোর সম্পাদক) জনাব মতিউর রহমান বাংলাদেশের ধনিক শ্রেণীর লুটপাটের কাহিনী বর্ণনা করে একটি ক্ষুদ্র পুস্তক রচনা করেছিলেন। এগুলো ছাড়া বাংলাদেশের ধনিক শ্রেণীর উদ্ভব ও বিকাশ সম্পর্কে আর অনুসন্ধান কিংবা গবেষণা কোথায়? অনুমান করি, বাংলাদেশের ধনিক শ্রেণী দেশটির মোট জনসংখ্যার এক শতাংশ। কিন্তু বাকি ৯৯ শতাংশ লোকের ওপর তাদের শক্তির দাপট অপরিসীম। বাংলাদেশে মধ্যবিত্ত ও শ্রমিক-কৃষকের সংখ্যা কত শতাংশ হবে? মধ্যবিত্ত শ্রেণীতে উচ্চ, মধ্য ও নিম্নস্তর চিহ্নিত করা যেতে পারে। সমাজে উচ্চ-মধ্যবিত্তরাও প্রভাবশালী। তারাও প্রচুর সম্পত্তির মালিক। তাদের সংখ্যাও তুলনামূলকভাবে কম। মধ্যস্তর ও নিম্নস্তর বড়। শ্রমিক-কৃষকের মধ্যে শ্রমিকের সংখ্যা কম, কৃষকের সংখ্যা বড়। একমাত্র পোশাক শ্রমিক ছাড়া জনগণের আর কোনো অংশেই সংগ্রামী স্পৃহা দেখা যায় না। লোকে অন্যায়-অবিচার মেনে চলছে। রাজনীতিতে কোনো দলেরই কোনো মহান লক্ষ্য নেই। গোটা জাতির সব চিন্তাভাবনা আবদ্ধ করে রাখা হয়েছে জামায়াতে ইসলামী, মুক্তিযুদ্ধ এবং শেখ হাসিনা ও খালেদা জিয়ার নেতৃত্ব-বিষয়ক আলোচনা ও ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়ায়।

বাংলাদেশের ৪৫টি ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর মোট জনসংখ্যা রাষ্ট্রের মোট জনসংখ্যার এক শতাংশের সামান্য বেশি; হিন্দুর সংখ্যা মোট জনসংখ্যার ৯ শতাংশের মতো,  জৈন, বৌদ্ধ ও খ্রিস্টানের সংখ্যা মোট জনসংখ্যার এক শতাংশের মতো; সব পৌরসভা ও সিটি করপোরেশনকে শহর ধরলে শহরবাসীর সংখ্যা ৪০ ও গ্রামবাসীর সংখ্যা ৬০ শতাংশের মতো। নারী ও পুরুষের সংখ্যা মোটামুটি সমান, শিক্ষা ও বিত্তভিত্তিক শ্রেণী এবং শ্রেণীস্তরগুলোর জনসংখ্যা ও জনপ্রকৃতও অবশ্য বিবেচ্য। এ বৈচিত্র্য নিয়ে বাংলাদেশের জাতি ও রাষ্ট্র। একপক্ষ বলছে ‘জয় বাংলা’, আরেক পক্ষ ‘বাংলাদেশ জিন্দাবাদ’। অধিকাংশ এনজিওপতিরা আর সিভিল সোসাইটিগুলোর বিশিষ্ট নাগরিকরা Pluralism in Culture নীতি অবলম্বনে করে জাতিকে বিভক্ত করছেন এবং অনৈক্য সৃষ্টি করছেন। বৈচিত্র্যের মধ্যে ঐক্য কিংবা বন্ধুত্বমূলক সমন্বয়ের ধারণা পরিহার করা হয়েছে। গণতন্ত্র, সমাজতন্ত্র, জাতীয়তাবাদ, আন্তর্জাতিকবাদ ইত্যাদি ধারণাকে পরিহার করে কিছু বুলি আওড়ানো হয়। এসবে শ্রমিক-কৃষক-মধ্যবিত্তের কোনো আস্থা দেখা যায় না। ধারণাগুলোকে করে  ফেলা হয়েছে ফোকলা। গণতন্ত্রের ধারণাকে পর্যবসিত করা হয়েছে কেবল ভোটাভুটির মাধ্যমে সরকার গঠনে। হীনস্বার্থান্বেষীরা স্বার্থ হীন উপায়ে হাসিলের জন্য সময়ে সময়ে জনসাধারণের বিভিন্ন অংশে হুজুগ সৃষ্টি করে। জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে উত্সব বলে অভিহিত করা হয়। রাজনীতিতে এখন আর কোনো রাজনীতি নেই; আছে শুধু নগ্ন ক্ষমতার লড়াই। ক্ষমতার লড়াইয়ে যারা লিপ্ত, তাদের চালকশক্তি হলো সম্পত্তির লিপ্সা। এ উত্সব পালনের সামর্থ্যও বাংলাদেশের সরকার ও রাজনৈতিক দলগুলো রাখে না। তত্ত্বাবধায়ক সরকার ও বিদেশী দূতাবাসের সংযোগ  রাজনীতিকে নিয়ে গেছে জনগণের জন্য প্রতারণামূলক ব্যাপারে। এ অবস্থায় লোকে রাজনীতিতে উত্সাহী হবে কেন?

কথা বলছেন আবুল কাসেম ফজলুল হক

বাংলাদেশের সমাজে মানুষের কেন্দ্রীয় চালকশক্তি এখন নিছক ক্ষমতা  ও সম্পত্তির লিপ্সা। যার সম্পত্তি যত বেশি, তার মর্যাদা তত বেশি। মানবিক গুণাবলি এ সমাজে অল্পই গুরুত্ব পায়। এ সমাজে যার ক্ষতি করার শক্তি যত বেশি, তার প্রভাব-প্রতিপত্তিও তত বেশি; মানুষের কল্যাণ করার শক্তি কোনো শক্তি বলেই স্বীকৃতি পায় না।

এনজিও ও সিভিল সোসাইটি মহল  থেকে প্রতিদিনের কথাবার্তায় রাজনীতিকে দূরে রেখে অর্থনৈতিক উন্নতিতে মনোনিবেশ করার কথা বলা হয়। পশ্চিমা বৃহত্ শক্তিবর্গ দুর্বল রাষ্ট্রগুলোকে দুর্বল ও নির্ভরশীল রাখার জন্য এসব দেশে সুস্থ রাজনীতির বিকাশ হতে দেয় না। নানা কৌশলে তারা এসব রাষ্ট্রকে ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করে নিজেদের স্বার্থ হাসিল করে নেয়।

মধ্যবিত্ত চরিত্রের নানা বৈশিষ্ট্য আছে। তাদের মধ্যে সুবিধাবাদী প্রবণতা বেশি। কিন্তু তাদের মধ্যে আদর্শ-নিষ্ঠা ও ত্যাগের মনোভাব দেখা যায়। ইতিহাসে এসবের প্রমাণ আছে— তাদের থেকেই আত্মপ্রকাশ করেন নতুন চিন্তক, নেতা, ভাবুক, কর্মী, শিল্পী, সাহিত্যিক ও সৃষ্টিশীল ব্যক্তি। মধ্যবিত্ত শ্রেণী জেগে উঠলে শ্রমিক-কৃষকও জাগে। মধ্যবিত্ত জাগলে উচ্চশ্রেণী থেকেও অনেকে মধ্যবিত্ত জাগরণের সমর্থক হয়। কায়েমি স্বার্থবাদীরা প্রতিক্রিয়ার ভূমিকা পালন করে— জাগরণকে দমন করার চেষ্টা করে। বাংলাদেশে মধ্যবিত্তের জাগরণ আবার কবে দেখা দেবে? বাংলাদেশের মধ্যবিত্ত যে আজ ঘুমন্ত, রাজনীতিবিমুখ, আর্থসামাজিক-রাষ্ট্রব্যবস্থার প্রগতিতে আস্থাহীন, তার নানা কারণ আছে। রাজনৈতিক কারণের সঙ্গে আছে অর্থনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কারণ। বাংলাদেশের সর্বস্তরের সাংস্কৃতিক চেতনা আজ বিকারগ্রস্ত। দর্শন, বিজ্ঞান, রাষ্ট্রচিন্তা, ইতিহাস ইত্যাদির চর্চা ব্রিটিশ আমল ও পাকিস্তান আমলে যেটুকু ছিল, তাও আজ আর নেই। ডিগ্রি অর্জন, চাকরিতে পদোন্নতি ও অর্থ আয়ের জন্য যে গবেষণা, তাতে সৃষ্টিশীলতা থাকে না। এগুলো দ্বারা বরং মানুষের সৃষ্টিশক্তি বিনষ্ট হয়।

মধ্যবিত্তের এই ঘুমন্ত দশার ব্যাপারকে ইতিহাসের দিক দিয়েও বিচার করে দেখতে হবে। ব্রিটিশ শাসিত বাংলায় রামমোহনের (১৭৭২-১৮৩৩) চিন্তা ও কাজের মধ্য দিয়ে সূচিত হয়েছিল এক রেনেসাঁস।

রেনেসাঁসের  ধারাবাহিকতায় বঙ্গভঙ্গ-বিরোধী আন্দোলনের সময় (১৯০৫-১১) সূচিত হয় গণজাগরণ। গণজাগরণের শুরুতেই হিন্দু-মুসলমান বিরোধ রাজনৈতিক রূপ নেয়। ওই রেনেসাঁস ও গণজাগরণের ধারাবাহিকতায়ই ঘটে ১৯৪৭-এর স্বাধীনতা, দেশভাগ ও পাকিস্তান প্রতিষ্ঠা। তার পর আমাদের এখানে সেই রেনেসাঁস ও গণজাগরণের ধারা ধরেই সংঘটিত হয় জমিদারি ব্যবস্থার বিলোপ, রাষ্ট্রভাষা আন্দোলন, শিক্ষা আন্দোলন, গণতান্ত্রিক ও সমাজতান্ত্রিক আকাঙ্ক্ষায় ব্যপ্তি, যুক্তফ্রন্টের একুশ দফা ও আওয়ামী লীগের ছয় দফা আন্দোলন, ঊনসত্তরের গণ-অভ্যুত্থান, একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ, স্বাধীন বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠা এবং বাংলাদেশ-উত্তর দুর্নীতিবিরোধী আন্দোলন। বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার পর ওই রেনেসাঁস ও জাগ্রত গণচেতনার যৌক্তিক বিকাশ ঘটেনি। রাজনৈতিক ও বৌদ্ধিক নেতৃত্বের অস্থিরতা, দুর্বলতা  ও দুর্নীতির মধ্য দিয়ে পরিসমাপ্ত হয় ওই রেনেসাঁস ও গণজাগরণ।

শিল্প-সাহিত্য ও চিন্তার ক্ষেত্রে আধুনিকতাবাদ ও উত্তরাধুনিকতাবাদ কাউন্টার রেনেসাঁস রূপে দেখা দিয়েছে এবং এগুলো চলমান। গণ-আন্দোলনকে ক্ষমতার হাতিয়ারে পরিণত করে পূর্বোক্ত গণজাগরণের অবসান ঘটানো হয়। ১৯৮০-এর দশকের স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলন ছিল নিতান্তই সরকার উত্খাত ও ক্ষমতা দখলের লড়াই। গণতন্ত্র, সমাজতন্ত্র, জাতীয়তাবাদ ইত্যাদি আদর্শকে এখন একেবারেই ফোকলা করে দেখা হয়। এ আন্দোলন-রাজনীতিতে জনসম্পৃক্তি থাকবে কীভাবে?

রেনেসাঁস ও গণজাগরণের বিলোপ ও বিভ্রান্ত কার্যকলাপের এ রাজনৈতিক প্রক্রিয়ার ভেতরে ১৯৮০-এর দশক থেকে সক্রিয় আছে সিভিল সোসাইটিগুলোর  বিশিষ্ট নাগরিকরা। ১৯৮০-এর দশক থেকেই বাংলাদেশে চালানো হচ্ছে depoliticization-এর বা নিঃরাজনীতিকরণের অদৃশ্য কার্যক্রম। ভূ-রাজনৈতিক কারণে পশ্চিমা বৃহত্ শক্তিবর্গের কাছে বাংলাদেশের গুরুত্ব বেশি।

পশ্চিমা বৃহত্ শক্তিবর্গ চলে জাতীয় শ্রেষ্ঠত্ববোধ নিয়ে এবং দুর্বল জাতিগুলোর মধ্যে তারা জাগিয়ে রাখতে চায় জাতীয় হীনতাবোধ। বাংলাদেশের সিভিল সোসাইটিগুলোর বিশিষ্ট ব্যক্তিদের মধ্যে দেখা যায় পশ্চিমের অন্ধ অনুসরণ ও অনুকরণের মনোভাব।

যে পতনশীলতা চলছে, তা থেকে উত্থানের জন্য দরকার নতুন রেনেসাঁস ও তার সম্পূরক নতুন গণজাগরণ। মনে রাখতে হবে, হুজুগ ও গণজাগরণ এক নয়। আমরা হুজুগ চাই না, চাই গণজাগরণ। নতুন গণজাগরণ। নতুন গণজাগরণের পটভূমিতে চাই নতুন রেনেসাঁস। রেনেসাঁস কেবল জ্ঞান দিয়ে হয় না। জ্ঞানের সঙ্গে দরকার হয় চরিত্রবল— Intellectual character.

বিশেষ দ্রষ্টব্য: লেখাটি একই শিরোনামে বণিকবার্তা ডট কমে ১৮ জানুয়ারি ২০১৪ তারিখে প্রকাশিত হয়। এখানে লেখাটি হুবহু সংকলন ও প্রকাশ করা হয়েছে।

Leave a Comment

error: Content is protected !!