সামাজিক সাম্য হচ্ছে নির্দিষ্ট সমাজের সমস্ত লোকের সমান অধিকার

সামাজিক সাম্য বা সামাজিক সমতা (ইংরেজি Social equality) হচ্ছে এমন একটি বিষয় যা একটি নির্দিষ্ট সমাজের সমস্ত লোকের সমান অধিকার, স্বাধীনতা এবং মর্যাদার সাথে যুক্ত থাকে; সম্ভবত নাগরিক অধিকার, বাকস্বাধীনতা, সম্পত্তির অধিকার এবং নির্দিষ্ট সামাজিক দ্রব্য এবং সামাজিক পরিষেবাসমূহে সমান প্রবেশাধিকার অন্তর্ভুক্ত।[১] সামাজিক সাম্যের জন্য আইনত প্রায়োগিক সামাজিক শ্রেণি বা বর্ণের সীমানা না থাকা এবং কোনো ব্যক্তির পরিচয়ের একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ দ্বারা অনুপ্রাণিত বৈষম্যের অবিদ্যমানতা প্রয়োজন।

উদাহরণস্বরূপ, সামাজিক সাম্যের সমর্থকগণ লিঙ্গ, চিহ্ন, নৃগোষ্ঠী, বয়স, যৌন অভিমুখীকরণ, জন্মলতিকা, বর্ণ বা শ্রেণি, আয় বা সম্পত্তি, ভাষা, ধর্ম, বিশ্বাস, মতামত, স্বাস্থ্য, বা অক্ষমতা নির্বিশেষে সকলের জন্য আইনের অধীনে সমান ন্যায়বিচারে বিশ্বাস করে। কোনো কৃত্রিম কারণ বা মনুষ্যসৃষ্ট ভেদাভেদে মানুষের মধ্যে ভেদাভেদ করা চলে না। শিক্ষার সমতা, সামাজিক ক্ষেত্রে সমান নিরাপত্তা এই সাম্যের দৃষ্টান্ত।

সামাজিক সাম্য সমান সুযোগের সাথে সম্পর্কিত। সামাজিক সাম্য বাস্তবে সাম্য কী তার কথা বলে। সাম্য ছাড়া যে মানুষের সামাজিক অস্তিত্বই বিপন্ন সামাজিক সাম্যে একথাই বলা হয়েছে। জন্মগতভাবেই মানুষ সমাজে বসবাস করছে যা সামাজিক সাম্যের ভিত্তি।

সামাজিক সাম্য বলতে বোঝায়, সমাজে ব্যক্তির সাথে ব্যক্তির কোনো বৈষম্য না থাকা। এ ধরনের সাম্য অনুসারে সমাজে সকল নাগরিক যোগ্যতা অনুসারে সমান সুযোগ সুবিধা প্রাপ্তির অধিকার।

আধুনিক রাষ্ট্রবিজ্ঞানীদের ভাষায়, “Social equality means that all the citizens are entitled to enjoy equal status in society and no one is entitled to special privileges.” মোট কথা, সামাজিক দৃষ্টিতে সকল মানুষের সমমর্যাদা, অধিকার ও স্বাধীনতা ভোগ করাই হলো সামাজিক সাম্য। এগুলো সামাজিক সাম্যের মূল কথা।[২]

সমাজ জীবনে সাম্যের গুরুত্ব ও তাৎপর্য

সাম্যের গুরুত্ব (ইংরেজি: Importance of equality in Social Life) তাৎপর্য রয়েছে রাষ্ট্র ও সমাজের অভ্যন্তরে সাম্য প্রতিষ্ঠার রাজনৈতিক অনুশীলনে। সামাজিক মানুষের জীবনে সাম্যের গুরুত্ব উপলব্ধি হয়েছে দাস সমাজ সৃষ্টির ঐতিহাসিক কাল থেকেই। বৈষম্য সৃষ্টির প্রারম্ভ থেকেই সাম্য সংক্রান্ত চিন্তা দানা বাঁধতে শুরু করে।

মূল নিবন্ধ: সাম্যের গুরুত্ব ও তাৎপর্য

রাষ্ট্রচিন্তা ও রাষ্ট্রতত্ত্বের এক বহুল আলোচিত ধারণা হচ্ছে এই সাম্য। সুষম ও ন্যায়ভিত্তিক সমাজ প্রতিষ্ঠায় সাম্যের প্রয়োজনীয়তা অপরিসীম। রাষ্ট্রবিজ্ঞানে সাম্যের ধারণাটির গুরুত্ব বা তাৎপর্য পায় বহুবিধ কারণে।

তথ্যসূত্র

১. রাসেল ব্লাকফোর্ড, ২০ জুলাই ২০০৬, “Genetic enhancement and the point of social equality”. Institute for Ethics and Emerging Technologies.
২. মো. আবদুল ওদুদআলেয়া পারভীন, রাজনৈতিক তত্ত্বের পরিচিতি, মনন পাবলিকেশন, ঢাকা, প্রথম প্রকাশ আগস্ট ২০১১, পৃষ্ঠা ১৪৯।

Leave a Comment

error: Content is protected !!