মাও সেতুঙের শেষ জীবনের উদ্ধৃতি হচ্ছে সভাপতি মাও সেতুংয়ের উদ্ধৃতির একটি ছোট সংকলন। গ্রন্থটি প্রথম সংকলিত হয় বাংলাদেশ থেকে ১৯৮৩ সনে, এরপর এটির বহুবার পুনর্মুদ্রণ হয়েছে। বইটিতে মাও সেতুংয়ের পরিণত বয়সের দৃষ্টিভঙ্গি ও ব্যবহারিক অভিজ্ঞতার নির্যাস প্রতিফলিত হয়েছে। গ্রন্থটি শুরু থেকেই চারটি অধ্যায়ে বিভক্ত ছিল; অধ্যায়গুলো হচ্ছে সর্বহারা শ্রেণির একনায়কত্ব, উপরিকাঠামো, যুদ্ধ ও বিপ্লব এবং দর্শন।
এই চারটি বিষয়ের প্রথমটি মার্কস থেকে মাও পর্যন্ত দীর্ঘ পথযাত্রায় অনুশীলন করা হয়েছে। উপরিকাঠামোর আলোচনাটি কীভাবে ভিত্তিকে বদলাতে কাজে লাগবে সে দিকে যেমন নজর দিয়েছে, তেমনি উপরিকাঠামোর বিভিন্ন উপাদানকে বিশ্লেষণ করেছে। যুদ্ধের ক্ষেত্রে মানবজাতিকে যে মহান উত্তরাধিকার মাও সেতুং দিয়ে গেছেন তা এই কয়েকটি লেখাতে কিছুটা হলেও বোঝা যাবে। আর দর্শন তো মুক্তির পথে হাঁটার প্রথম পদক্ষেপ।
মাও সেতুঙের শেষ জীবনের উদ্ধৃতি ই-বই আকারে প্রকাশ করা হয়েছিল এই মহান নেতার শেষ জীবনের জ্ঞানগর্ভ কিছু কথার সাথে মাও অনুসারি ছাত্র-শিক্ষক-রাজনীতিক-শ্রমিক-কৃষকদের পরিচয় করিয়ে দেবার জন্য। তিনি অনেক জটিল কথাকে জনগণের সামনে অত্যন্ত সহজভাবে উপস্থাপন করতেন। জনগণের সেবায় মানবেতিহাসের সমস্ত জ্ঞানকে তিনি কাজে লাগিয়েছিলেন। আমরাও মাও সেতুঙের জ্ঞান ও অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে বাংলা ভাষাভাষী অঞ্চলে জনগণের জীবনে পরিবর্তন আনতে পারলেই আমাদের শ্রম স্বার্থক হবে।
এ পুস্তিকাটি বর্তমানে বিলুপ্ত ‘মাও সেতুঙ চিন্তাধারা প্রচার আন্দোলন’ ১৯৮৩ সালে প্রথম প্রকাশ করে। পরে ‘আন্দোলন প্রকাশনা’ এটি ২০০৫ সালে ফটোকপি করে প্রচার করে। সেখান থেকেই বেশিরভাগ উদ্ধৃতিগুলো নেয়া হয়েছে। এছাড়াও আমি এই সংকলনে অনেকগুলো উদ্ধৃতি চারটি অধ্যায়েই যুক্ত করেছি। এক্ষেত্রে যেসব উদ্ধৃতি প্রাসঙ্গিক মনে হয়েছে, সেগুলো নির্দ্বিধায় যুক্ত করা হয়েছে। ২০১৩ সালের ই-বই সংস্করণে পরিশিষ্টে দুটি লেখা যুক্ত করা হয়েছিল, এবার সেগুলো বাদ দেয়া হয়েছে। ২০১৫ সালে বইটি প্রকাশ করছে ঐশী প্রকাশনী থেকে কমরেড মাও সেতুঙের উদ্ধৃতি ও শেষ জীবনের উদ্ধৃতি বই দুটোকে একত্রে প্রকাশ করা হয়।
মাও সেতুঙের শেষ জীবনের উদ্ধৃতি‘র ই-বই প্রকাশিত হয় ৯ সেপ্টেম্বর ২০১৩ তারিখে। সেটার অনলাইন সংস্করণ প্রথম প্রকাশিত হয় প্রাণকাকলি ব্লগে ১১ সেপ্টেম্বর ২০১৩ তারিখে। অর্থাৎ ই-বই প্রকাশের দুইদিন পরে। রোদ্দুরে ডট কমে প্রকাশিত হয়েছিল ২৪ অক্টোবর, ২০১৬ তারিখে। এসব জায়গায় প্রকাশের সময় বানানের ক্ষেত্রে আমি আমার পচ্ছন্দকে প্রাধান্য দিয়েছি এবং বানান যথাসম্ভব সহজ করা হয়েছে।
নিজের আগ্রহে আমি ২০১৩ সালে এটি নিজ হাতে কম্পোজ করেছিলাম। এই বইটির অনলাইন সংস্করণ করতে আমাকে উৎসাহিত করেছিলেন কবি দোলন প্রভা ও হাসান জামিল। ৯ সেপ্টেম্বর, ২০১৩ তারিখে লেখা অনলাইন সংস্করণের ভূমিকাটি অদল বদল করে লিখতে গিয়ে আমার সেই দুজন ব্যক্তির কথা মনে পড়লো। এই কাজটি করা হচ্ছে পাঠকদের কাজে লাগবে এমন বিবেচনা থেকে। পাঠকের আগ্রহ এবং ভালো লাগাই আমাদের প্রেরণা।
সূচিপত্র
০১. সর্বহারা শ্রেণির একনায়কত্ব, ০২. উপরিকাঠামো, ০৩. যুদ্ধ ও বিপ্লব ও ০৪. দর্শন।
অনুপ সাদি,৪ এপ্রিল, ২০২১, এসজিআর।
অনুপ সাদি বাংলাদেশের একজন লেখক ও গবেষক। তাঁর লেখা ও সম্পাদিত গ্রন্থের সংখ্যা এগারটি। ২০০৪ সালে কবিতা গ্রন্থ প্রকাশের মাধ্যমে তিনি পাঠকের সামনে আবির্ভূত হন। ‘সমাজতন্ত্র’ ও ‘মার্কসবাদ’ তাঁর দুটি পাঠকপ্রিয় প্রবন্ধ গ্রন্থ। সাহিত্য ও রাজনীতি বিষয়ে চিন্তাশীল গবেষণামূলক লেখা তাঁর আগ্রহের বিষয়।