কমরেড মাও সে-তুঙ বতর্মান যুগের সবচেয়ে মহান মার্কসবাদী-লেনিনবাদী। কমরেড মাও সে-তুঙ প্রতিভার সঙ্গে, সৃজনশীলভাবে ও সামগ্রিকভাবে মার্কসবাদ-লেনিনবাদকে উত্তরাধিকার সূত্রে লাভ করেছেন, রক্ষা করেছেন ও বিকাশ করেছেন, মার্কসবাদ-লেনিনবাদকে এক সম্পূর্ণ নতুন পর্যায়ে উন্নত করেছেন।
মাও সে-তুঙের চিন্তাধারা এমন একটা যুগের মার্কসবাদ-লেনিনবাদ, যে যুগে সাম্রাজ্যবাদ সামগ্রিক ধ্বংসের মুখে চলছে আর সমাজতন্ত্র এগিয়ে চলছে বিশ্বব্যাপী বিজয়ের পথে। মাও সে-তুঙের চিন্তাধারা হচ্ছে সাম্রাজ্যবাদের বিরোধিতা করার, সংশোধনবাদ ও গোঁড়ামিবাদের বিরোধিতা করার শক্তিশালী মতাদর্শগত অস্ত্র। মাও সে-তুঙের চিন্তাধারা হচ্ছে সমগ্র পার্টির, সমগ্র সৈন্যবাহিনীর ও সমগ্র দেশের সমস্ত কাজের পথনির্দেশক নীতি।
অতএব, চিরকাল মাও সে-তুঙের চিন্তাধারার মহান লাল পতাকাকে উর্ধে তুলে ধরা, সমগ্র দেশের জনগণের মস্তিষ্কেকে মাও সে-তুঙের চিন্তাধারায় সুসজ্জিত করা এবং সমস্ত কাজেই মাও সে-তুঙের চিন্তাধারাকে প্রাধান্য দিতে দৃঢ় থাকাই হচ্ছে আমাদের পার্টির রাজনৈতিক মতাদর্শগত কাজের সবচেয়ে মৌলিক কর্তব্য। ব্যাপক শ্রমিক, কৃষক ও সৈন্যসাধারণ, ব্যাপক বিপ্লবী কেডার ও বুদ্ধিজীবীদের অবশ্যই মাও সে-তুঙের চিন্তাধারাকে প্রকৃতভাবে আয়ত্ত করতে হবে, তাদের প্রত্যেককেই সভাপতি মাওয়ের বই পড়তে হবে, সভাপতি মাওয়ের কথা শুনতে হবে, সভাপতি মাওয়ের নির্দেশানুসারে কাজ করতে হবে, সভাপতি মাওয়ের ভাল সৈনিক হতে হবে।
সভাপতি মাওয়ের রচনাবলী অধ্যয়নের সময় বিশেষ বিশেষ সমস্যা নিয়ে অধ্যয়ন করতে হবে, সৃজনশীলভাবে অধ্যয়ন ও প্রয়োগ করতে হবে, অধ্যয়নের সঙ্গে প্রয়োগের সমন্বয় সাধন করতে হবে, দ্রুত ফল পাবার জন্য যা এখনি প্রয়োজন তা প্রথমে অধ্যয়ন করতে হবে এবং “প্রয়োগের” ক্ষেত্রে কঠোর প্রচেষ্টা চালাতে হবে। মাও সে-তুঙের চিন্তাধারাকে প্রকৃতভাবে আয়ত্ত করার জন্য সভাপতি মাওয়ের অনেক মৌলিক দৃষ্টিকোণকেই পুনঃপুনঃ অধ্যয়ন করা উচিত, সবচেয়ে ভাল হচ্ছে তার অমূল্য বাণীর কতগুলোকে মুখস্হ করে রাখা এবং সেগুলোকে পুনঃপুনঃ অধ্যয়ন ও পুনঃপুনঃ প্রয়োগ করা। সংবাদপত্রে সর্বদাই বাস্তব অবস্থা অনুসারে সভাপতি মাওয়ের উদ্ধৃতি প্রকাশ করা উচিত, যাতে করে সবাই তা অধ্যয়ন ও প্রয়োগ করতে পারে। বিগত কয়েক বছর ধরে ব্যাপক জনসাধারণ কর্তৃক সৃজনশীলভাবে সভাপতি মাওয়ের রচনাবলী অধ্যয়ন ও প্রয়োগ করার অভিজ্ঞতা প্রমাণ করেছে যে, বিশেষ বিশেষ সমস্যা নিয়ে সভাপতি মাওয়ের উদ্ধৃতি বাছাই করে অধ্যয়ন করাটা হচ্ছে মাও সে-তুঙের চিন্তাধারা অধ্যয়ন করার একটা উত্তম পদ্ধতি, দ্রুত ফল পাবার একটা কার্যকরী পদ্ধতি।
ব্যাপক জনসাধারণকে মাও সে-তুঙের চিন্তাধারা আরো ভালভাবে অধ্যয়ন করতে সাহায্য করার জন্য আমরা বাছাই করে “সভাপতি মাও সে-তুঙের উদ্ধৃতি” সংকলিত করেছি। প্রত্যেক ইউনিটকে অধ্যয়নের কাজ সংগঠিত করার সময়ে এমন বিষয়বস্তু বাছাই করে নিতে হবে, যা পরিস্থিতি, কর্তব্য, জনসাধারণের মতাদর্শগত অবস্থা ও তাদের কাজের অবস্থার সঙ্গে সম্পর্কিত।
এখন আমাদের মহান মাতৃভূমিতে এমন একটা নতুন যুগের উন্মেষ হচ্ছে, যে যুগে শ্রমিক, কৃষক ও সৈন্যরা মার্কসবাদ-লেনিনবাদ, মাও সে-তুঙের চিন্তাধারাকে আয়ত্ত করছেন। মাও সে-তুঙের চিন্তাধারাকে ব্যাপক জনসাধারণ একবার যদি আয়ত্ত করে ফেলেন, তা’হলে সেটা অফুরন্ত শক্তিতে পরিণত হবে এবং অতুলনীয় শক্তিশালী মানসিক এটম বোমায় রূপান্তরিত হবে। বিপুল সংখ্যায় ” সভাপতি মাও সে-তুঙের উদ্ধৃতি ” প্রকাশ করাই হচ্ছে ব্যাপক জনসাধারণকে মাও সে-তুঙের চিন্তাধারা আয়ত্ত করার জন্য এবং আমাদের জনগণের চিন্তাধারার বৈপ্লবিককরণের কাজকে এগিয়ে নিয়ে যাবার জন্য একটা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ব্যবস্থা। আশা করি, প্রত্যেক কমরেডই মনোযোগ দিয়ে অধ্যবসায়ের সঙ্গে অধ্যয়ন করবেন এবং সমগ্র দেশে সভাপতি মাও সে-তুঙের রচনাবলী সৃজনশীলভাবে অধ্যয়ন ও প্রয়োগ করার নতুন উত্তাল জোয়ারের সৃষ্টি করবেন এবং মাও সে-তুঙের চিন্তাধারার মহান লাল পতাকার তলে আমাদের দেশকে আধুনিক কৃষি, আধুনিক শিল্প, আধুনিক বিজ্ঞান ও সংস্কৃতি এবং আধুনিক প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাসহ এক মহান সমাজতান্ত্রিক রাষ্ট্র হিসাবে গড়ে তোলার জন্য সংগ্রাম করবেন।
লিন পিয়াও
১৬ ডিসেম্বর ১৯৬৬
ফুলকিবাজ ডট কমে অতিথি লেখক হিসেবে রাজনৈতিক বিশ্লেষণ, কলাম, অনুবাদ, নিবন্ধ ও প্রবন্ধ লেখায় সম্মতি জ্ঞাপন করেছেন পূরবী সম্মানিত, ইভান অরক্ষিত, রনো সরকার, দিল আফরোজ, অনাবিলা অনা এবং রণজিৎ মল্লিক। এছাড়াও আরো অনেকের লেখা এখানে প্রকাশ করা হয়।