মেকিয়াভেলি রচনাবলী হচ্ছে তাঁর রচিত গুরুত্বপূর্ণ বেশ কয়েকটি গ্রন্থ

নিকোলো মেকিয়াভেলি রচনাবলী (ইংরেজি: Books of Machiavelli) হচ্ছে ইতালির জাতীয়তাবাদী লেখক নিকোলো মেকিয়াভেলি রচিত মোট এগারটি পুস্তক ও পুস্তিকা। তাঁর রচিত সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ গ্রন্থ হচ্ছে চারটি। নির্বাসিত জীবনযাপন কালে মেকিয়াভেলি অধপতিত জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করার জন্য শক্তিশালী শাসকগণ কিভাবে রাজনীতিকে ধর্ম ও নৈতিকতার প্রভাবমুক্ত করে দেশ ও জাতিকে পরিচালিত করবেন সেই সম্পর্কে মত প্রদান করেছেন। জাতিকে সমৃদ্ধশালী করবার বিভিন্নমুখী বিবরণ মেকিয়াভেলির গ্রন্থগুলোতে ফুটে উঠেছে।[১]

মেকিয়াভেলি রচনাবলী

১. পিসার উপর বক্তব্য,
২. ভালদিচিয়ানার বিদ্রোহী জনগণের সাথে আচরণের পদ্ধতি সম্পর্কে,
৩. বিবরণী,
৪. অর্থের বিধান সম্পর্কে আলোচনা,
৫. জার্মানি রাজ্য সম্পর্কিত প্রতিবেদন,
৬. ফ্লোরেন্স সরকারের সংস্কার সম্পর্কিত বক্তব্য,
৭. কাস্ত্রুস্কিও কাস্ত্রাকানীর জীবনী,
৮. ফ্লোরেনটাইনের ইতিহাস, ১৫২৩, ফ্লোরেন্সের ইতিহাস বিষয়ক,
৯. দ্য আর্ট অফ ওয়ার, ১৫২৩, রাজার প্রতি যুদ্ধ বিষয়ক পরামর্শ,
১০. দ্য প্রিন্স, ১৫১৩, সরকার পরিচালনার বাস্তব দিকনির্দেশনা সংক্রান্ত,
১১. লিভাইর উপর বক্তব্য, ১৫২১, রাষ্ট্রীয় সংগঠনের নানা খুঁটিনাটি বিষয় সংক্রান্ত।

‘দ্যা প্রিন্স’ তাঁর সবচেয়ে আলোড়ন সৃষ্টিকারী এবং বহুল পঠিত গ্রন্থ। অনেক সমালোচক মনে করেন গ্রন্থখানি স্বৈরশাসক লোরেঞ্জো ডি মেডিসির নামে উৎসর্গ করার মধ্য দিয়ে তিনি মূলত লোরেঞ্জোর কৃপাদৃষ্টি কামনা করেছিলেন। কিন্তু তিনি কৃপাদৃষ্টি পাননি। The Prince এবং The Discourses on Livy গ্রন্থ দুটির মাধ্যমেই মেকিয়াভেলির রাজনৈতিক ধারণা ও ব্যাখ্যার সঙ্গে আমরা প্রধানত পরিচিত হয়। তাঁর লেখায় গ্রন্থ দুটির মধ্যে পার্থক্য ফুটে উঠেছে। যেমন, Discourses গ্রন্থে রোমান প্রজাতন্ত্র সম্পর্কে যে অনুরাগ তিনি দেখিয়েছেন The Prince গ্রন্থে সেরকম কোনো আগ্রহ তিনি দেখান নি। রাজতন্ত্র বা একছত্র সরকার ছাড়া অন্য কোনো ধরণের সরকার যে ইতালিতে প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব নয় The Prince গ্রন্থে এই অনুভূতিই প্রকাশ পেয়েছে। The Prince গ্রন্থের মধ্যে এক উগ্র রাজনৈতিকতা বোধসম্পন্ন, প্রতিহিংসাপরায়ণ মেকিয়াভেলিকে আবিষ্কার করা যায়। এদিক থেকে বিচার করে বলা যায় Discourses অনেক শান্ত ও সংযত। এ দিক থেকে Discourses-এ অনেকটা মেকিয়াভেলির পরিণত চিন্তার স্পষ্ট আভাস পাওয়া যায়।

মেকিয়াভেলি বিভিন্ন রচনা ও কর্মময় জীবন প্রনালীর মাধ্যমে রাষ্ট্রদর্শনে অপরিমেয় অবদান রেখে অবশেষে ১৫২৭ খ্রিস্টাব্দে হঠাৎ তিনি মৃত্যুমুখে পতিত হন।

তথ্যসূত্র

১. অনুপ সাদি, ১২ আগস্ট ২০১৯, “মেকিয়াভেলি রচিত গ্রন্থসমূহ প্রসঙ্গে”, রোদ্দুরে ডট কম, ঢাকা, ইউআরএল: https://www.roddure.com/philosophy/books-of-machiavelli/
২. মো. আবদুল ওদুদ (১৪ এপ্রিল ২০১৪)। “মেকিয়াভেলি”। রাষ্ট্রদর্শন (২ সংস্করণ)। ঢাকা: মনন পাবলিকেশন। পৃষ্ঠা ২১৫।

রচনাকাল: ১২ আগস্ট ২০১৯, নেত্রকোনা বাংলাদেশ।

1 thought on “মেকিয়াভেলি রচনাবলী হচ্ছে তাঁর রচিত গুরুত্বপূর্ণ বেশ কয়েকটি গ্রন্থ”

  1. আপনি নিকোলা মেকিয়াভেলির জীবনী পর্বে বলছেন, ” The Prince মেকিয়াভেলির মৃত্যুর পাঁচ বৎসর পরে প্রকাশিত হয় “। কিন্তু এ-ই পর্বে বললেন, ” অনেক সমালোচক মনে করেন গ্রন্থখানি লোরেঞ্জো দ্যা মেডিসির নামে উৎসর্গ করেছিলেন তার কৃপাদৃষ্টি পাওয়ার আশায়, কিন্তু তিনি তা পাননি “। এখন প্রশ্ন হচ্ছে, বইটা যদি তার মৃত্যুর পরে বের হয় তাহলে তিনি কীভাবে লোরেঞ্জোকে উৎসর্গ করে গেলেন? এবং তিনি যদি মৃত্যুর আগেই উৎসর্গ করে যান কিন্তু বইটি প্রকাশিত হয়েছে মৃত্যুর পর,অতএব তার মৃত্যুর আগে লোরেঞ্জোর জানার সুযোগ ছিলোনা যে তার কৃপা পাওয়ার জন্য কেউ তাকে উৎসর্গ করে বই লিখেছে তাহলে তিনি কৃপা পাননি কেন বলা হলো? আর মেকিয়াভেলির জন্ম ১৪৬৯ এবং লোরেঞ্জো দ্যা মেডিসির মৃত্যু ১৪৯২, তাহলে দেখা যায় লোরেঞ্জো দ্যা মেডিসির মৃত্যুর সময় তার বয়েস ছিলো ২২-২৩ বৎসর এবং ১৪৯৪ এ হাউজ অফ মেডিসির শাসনের অবসানের চার বছর পর ২৯ বৎসর বয়সে ফ্লোরেন্সের সিভিল সার্ভিসে যোগ দেন। তাহলে দেখা যায় লোরেঞ্জো দ্যা মেডিসির মৃত্যুর ছয় বৎসর পর তিনি কর্মক্ষেত্রে যোগ দিয়েছেন। তাহলে যেখানে লোরেঞ্জোর মৃত্যুর পরে তিনি রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে জড়িত হয়েছিলেন তাহলে তিনি মৃত লোরেঞ্জোর কাছে কৃপাদৃষ্টি কেন চাইতে যাবেন এবং লেখালেখি তিনি শুরু করেছিন নির্বাসিত হওয়ার পর তখন লোরেঞ্জো মরে কবরে ঘাস, তাহলে কোন যুক্তিতে লোরেঞ্জোর কৃপাদৃষ্টি চাইলেন?

    Reply

Leave a Comment

error: Content is protected !!