সরসী

নামটি তমার সরেস, যেন স্বর্গ থেকে আসা সুঘ্রাণ,
ট্রেন থেকে নামার শেষ মুহূর্তে জানলাম;
তুমি এক মহাগল্প আমার অচেনা শহরে;
— দেখা কী হবে আর কোনোদিন, শেষ প্রশ্ন ছুঁড়লাম ক্ষীণ ভরসায়,
— হতেও পারে অন্য কোনোখানে অন্য কোনো ট্রেনে,
— একদিন চা খেতে এসো চায়ের দোকানে, শেষবার বললাম শেষ মিনতিতে,
— কেন নিজের ঘর নেই বুঝি, শেষ প্রশ্ন উঁচিয়ে ধরলে চোখের ভ্রূকুটিতে?

এরপর জানালাম, আমি এক জন্মকবি, জন্ম হতে উদ্বাস্তু,
ঘর বাঁধতে শিখিনি; তারপর পরিচয় কোথাকার কে,
এরপর উড়ে এসে বাসা বাঁধে এক ঝাঁক আশা বুকের কুঠুরিতে,
একদিন নিশ্চয় দেখা হবে, হয়ত আমিও হবো এক ঘরামি,
তারপর পড়বে মনে সেই বিকেল, তোমার দিকে তাকিয়ে থাকা
একটি আদুরে বিকেল, মুখোমুখি সরসী আর আমি,
একটি বিকেল শুধু পিয়ানোর সুর প্রতি লোমকূপে,
মুখোমুখি দুটি সিট, মুখোমুখি বসে থাকা অসীম আকাশ,
তারপর অচেনা স্টেশনে নেমে যাওয়া, নিজেদের গন্তব্যে ছুট,
জীবনের নিত্যদিনের কর্মক্লান্ত ঘামে বেঁচে থাকা।

আবার তোমাকে ভাবি, দেখা হয় যদি, কি কথা হবে!
— এতদিন পরে ঝড় উঠলো হৃদয়ে, এতোদিন পরে তুমুল বজ্রপাত, তোমার সঙ্গে দেখা হবার পর সৃষ্টি হলো মহাকাব্য, তারপর আমার ভুবনে শুধু আলো আর আলো এই শহরেও তবু ভালোবাসো ভালো, তখনো হয়তো থাকবে একই প্রশ্ন,
— তুমি কী হবে আমার সেই একতারা!
— তুমি কী হবে আমার সেই গতিধারা!

আরো পড়ুন

২৭ মার্চ ২০০৭,
গফরগাঁও ময়মনসিংহ

Leave a Comment

error: Content is protected !!