এক চিলতে চিহ্নের মাঝে উজ্জ্বল বিন্দু

অতি সাধারণেরা যেভাবে থাকতো তিনিও তেমনটি,
সাজগোছের বাহার নেই, অতিরঞ্জিত গল্প নেই তাঁর,
সকাল থেকে রাত পর্যন্ত মেতে থাকতেন কাজে,
কর্মঠ থাকেন পাষাণের মঞ্চে প্রমাণ দিতে আপন কর্মের।

তাঁর সাধারণ বাড়িটির একটি পাকশালা ছিলো
যেটা এখন উৎসবে রেখে যাওয়া হাসি কান্নার সাক্ষী মাত্র,
সেখানে ফুটন্ত তেলে ফুলে ওঠা মালপোয়ার মতো
দুঃখগুলো পুড়তে পুড়তে পরিপুর্ণ হতো।

তবে তিনি জানতেন সরল সহজ ছড়া পাঠের মতো জীবন না,
পাহাড়ের ঢাল বেয়ে বাঁকা পথেই চলতে হবে,
জীবন-মৃত্যুকে পাশাপাশি রেখেই
খেলতে হবে অরণ্যের গভীরে।

বিপরীত স্রোতের যাত্রী যে তিনি ছিলেন তেমনটাও না,
আবার বদলের হাওয়াতেও শরীর জুড়াতেন না,
সাধারণের মাঝে কিছুটা অন্যরকম ছিলো
তাঁর বাঁধানো বুলি।

যদিও কোন যুদ্ধগামী ক্যানভাসের চিত্র আঁকতে পারেননি
কিন্তু দ্বিখন্ডের ইতিহাসের কাহিনী ছিলো তাঁর ঝুড়িতে,
খোয়ানোর করুন ব্যথা ছিলো মনে,
তবুও বুক ফুলিয়ে বিকেলের ফুরফুরে বাতাসে পা মেলে বসতেন।

আমাদের পান্ডিত্যের জগতে তিনি অতি নগণ্য ছিলেন,
তারপরেও ফেটে যাওয়া মটর দানার মতো
ছড়িয়েছেন লোকগীতের বাহার,
বপন করেছেন কৃষ্টিকে এক ঝাঁকড়া পালকওয়ালা মাণিকজোড়।

স্বপ্নে বিভোর ছিলেন না, বাস্তবকে আলিঙ্গন করতেন গুলঞ্চের মতো,
বিচ্ছুরিত আলোর মতো বিলাতেন নিজের মমত্ত্ব,
বৃক্ষের ফাটলে হাত বুলিয়ে খুঁজতেন নিজের অস্তিত্ব,
ভাবতেন, মানচিত্রে এক চিলতে চিহ্ন রাখবেন।

১৪.০৫.২০২২
সারদা ঘোষ রোড, ময়মনসিংহ

1 thought on “এক চিলতে চিহ্নের মাঝে উজ্জ্বল বিন্দু”

  1. কবিতার ভাষাটা যদিও কিছুটা কঠিন, তদুপরি কবিতাটি পড়ে ভাল লাগল।

    Reply

Leave a Comment

error: Content is protected !!