জরুরি নির্দেশ: তিন

এখন শহরের পথে পথে অনেক পাখি
উড়াও পাখিদের মাথার খুলি,
দেখামাত্র হত্যা কর, দেখামাত্র কর গুলি
এখন জরুরি কাল, জরুরি প্রয়োজন,
এখন পাখিদের হত্যার তুমুল আয়োজন
চালাতে শ্বাস প্রশ্বাস দরকার কাঁদানে গ্যাস
এখন কথা বলার বদলে শুধুই গোঙানো
মুখ দিয়ে ফেনা তোলা আর জলপাই গাড়িতে পতাকা উড়ানো।

এখন শান্তিতে গ্রহণ করো মৃত্যু ও রক্তপাত
শান্ত পথে ধরে রাখো তোমাদের রিক্ত হাত,
হাতে রাখো হ্যান্ডকাপ, কফ তোলো রাজপথে,
ভুলে যাও মুছে ফেলো, কী লেখা ছিলো জীবনের শপথে,

এখন আনুগত্যের কাল, আনুগত্যে শক্তি পাওয়া যায়,
মহামান্যের সামনে মাননীয়রা ছুরিতে শান দেয়
হে মহামহিম, তুমি শক্তিমানেদের ব্যক্ত করো সবখানে
করহ সম্মান ক্ষমতাকে, পূজা করো বীরগণে,
প্রাণ দাও বীরের পদতলে, আনুগত্য আনো প্রাণে
অবিরত হও অবনত, মৃত্যু আসছে ঠেলাগাড়িতে চড়ে তোমাদের সম্মুখপানে,

শেখো ভক্তি করো ভক্তি ভক্তিই পরম শান্তির মূল
ভক্তি দেবে তোমাদের মুক্তি, এই কথা মেনো নাকো ভুল
কেউ কোনো নড়াচড়া করো না, ভক্তি করো শক্তিমানে
সবকিছু পাবি তোরা ভক্তি আর ভয়ের শাসনে
ভক্তি করলে পাবি বংশগৌরব, পাবি অজস্র খেতাব
ভক্তি কর, পাবি টাকা, কড়ি পাবি, পাবি অবৈধ জবাব,
ভাবিও না কোনোকিছু, তৈরি করো না নয়া জমানার কিছু
যা আছে সব দান করো, ছেড়ো না দাসত্বের পিছু
যেভাবে কলুর বলদ আছো, সেভাবেই কাটাও সমগ্র জীবন,
ক্রীতদাস, ভূমিদাস, শ্রমদাস, বাঁদি হয়ে বাঁচার অনুশীলন,
ধন্য হও ঐতিহ্যের পূজা করে, সম্মান করো ক্ষমতাকে
ক্ষমতাকে সম্মান করে পাবে সোনার বাংলা, সোনালী দিনকে
আফিম আর গাঁজা খাও আর ঘুমাও, থাকো কর্মহীন,
কাগজের বাঘ সেজে বসে থেকে, ধীরে ধীরে হও বিলীন
কিংবা সিংহাসনে বসে থাকো প্রাচীন রাজার পোশাক পরে
স্বাধীনতা নিয়ে ভেবো না, এজগতে সবাই একদিন যায় মরে,
কেউ কোনো দিন কক্ষনো ক্ষমতার আশপাশে ঘেঁষবে না
কেউ চিন্তা করবে না, শুধু মানবে রেডিও টিভির নির্দেশনা

আর শোনো,
বোবার কোনো শত্রু নেই
তাই নির্বাক হয়ে যাও চিরদিনের জন্য,
কানে কিছু শোনো না, চোখে কিছু দেখো না, মুখে কিছু বলো না
চোখ মুখ কান বন্ধ রাখো
চোখ মুখ কান বন্ধ রেখে মাথা নত করো
জলপাই রঙের সামনে।

আরো পড়ুন

২২ আগস্ট ২০০৭
গফরগাঁও, ময়মনসিংহ।

Leave a Comment

error: Content is protected !!