ইংরেজি সাহিত্য ইংরেজি ভাষায় সপ্তম শতাব্দী থেকে অদ্যাবধি লিখিত সাহিত্য

ইংরেজি সাহিত্য (ইংরেজি: English Literature) হচ্ছে সপ্তম শতাব্দী থেকে অদ্যাবধি ব্রিটিশ দ্বীপপুঞ্জের বাসিন্দাদের দ্বারা ইংরেজী ভাষায় রচিত লিখিত সাহিত্য ও তৎসংক্রান্ত রচনাবলী। ব্রিটিশ দ্বীপপুঞ্জের বাইরে ইংরেজিতে রচিত প্রধান সাহিত্যগুলিকে আমেরিকান সাহিত্য, অস্ট্রেলিয় সাহিত্য, কানাডিয় সাহিত্য এবং নিউজিল্যান্ডের সাহিত্যের অধীনে আলাদাভাবে বিবেচনা করা হয়। ইংরেজি সাহিত্যকে মাঝে মাঝে সংকীর্ণ হিসাবে অপবাদ দেয়া হয়েছে। এটি যুক্তিযুক্ত হতে পারে যে কোনও একক ইংরেজী উপন্যাস রুশ লেখক লিও তলস্তয়ের যুদ্ধ ও শান্তি বা ফরাসী লেখক গুস্তাভ ফ্লবার্টের মাদাম বোভেরির মতো সর্বজনীনতা অর্জন করতে পারেনি।[১]

এখানে আরেকটা জিনিস মনে রাখতে হবে, সদ্যগত বিশ শতকের সেরা ইংরেজি গদ্যকারদের বেশির ভাগই কিন্তু ইংল্যান্ডের মূল ভূখণ্ডের বাইরের! একালের সালমান রাশদী, অমিতাভ ঘোষ, অরুন্ধতী রায় কিংবা ভি এস নাইপাল, হেনরি জেমস, জোসেফ কনরাড—কেউই মূল ভূখণ্ড ইংল্যান্ডের নয়।[২]

সাধারণ পাঠকদের আগ্রহ ও প্রয়োজনের কথা বিশেষভাবে মনে রেখেই ইংরেজি সাহিত্য সম্বন্ধে এখানে কিছু লেখা প্রকাশ করা হয়েছে। এছাড়াও ইংরেজি সাহিত্যের ইতিহাস বিষয়ক কিছু লেখা প্রকাশ করা হয়েছে।  বাংলা ইংরেজি সাহিত্যের পাঠকদের কাছে এইসব লেখার মূল্য রয়েছে।  ইংরেজি সাহিত্যের ক্রমবিকাশের একটি সামগ্রিক ও কালানুক্রমিক রুপরেখা ফুটিয়ে তোলা হয়েছে সর্বস্তরের পাঠকের অনুসন্ধিৎসার কথা মনে রেখে। লেখাসমূহে সংশ্লিষ্ট যুগের সামাজিক, রাজনৈতিক ও সাহিত্যিক বৈশিষ্ট্যসমূহ, প্রধান ও পাঠ্যতালিকাভুক্ত কবি-লেখকদের যাবতীয় রচনা এবং প্রয়োজনীয় ক্ষেত্রগুলিতে বাংলা সাহিত্যের সঙ্গে প্রাসঙ্গিক তুলনামূলক আলোচনা স্থান পেয়েছে। আগ্রহী পাঠকগণ যাতে আরো বিশদভাবে অনুশীলনে উৎসাহিত হন সেই বিষয়ে মনোযোগ দেয়া হয়েছে।

কোনো জাতি যখন রাজনৈতিক ক্ষমতা ও অর্থনৈতিক স্বচ্ছলতার অধিকারী হয়, তখনই তাহাদের সাহিত্য, শিল্পকলা প্রভৃতির বিকাশ ও উন্নতি হয়। পেরিক্লিসের এথেন্স, অগাস্টাস সীজারের রোম, সমুদ্র গুপ্তের ভারত, প্রথম এলিজাবেথের ইংল্যাণ্ড—সর্বত্র এই একই কথা। বর্তমানে সাম্রাজ্য হারা ইংল্যান্ড দ্বিতীয় স্তরের রাজনৈতিক শক্তি, তাহার আর্থিক অবস্থাও শোচনীয়। অপরদিকে, ক্ষমতা ও স্বাচ্ছল্যের কেন্দ্রবিন্দুটি যুক্তরাষ্ট্রে সরে গেছে। সেখানেও সাহিত্য লেখা হয় ইংরেজি ভাষায়। আবার অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ড, ভারতসহ পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে বহু ধারায় ইংরেজি সাহিত্য রচিত হচ্ছে। সেইজন্যই ইংল্যান্ড অদূর ভবিষতে তার সাহিত্য গরিমা পুনরুদ্ধার করতে পারবে না। কিন্তু তা সত্বেও নির্ধিধায় একথা বলা যেতে পারে যে, ইংল্যান্ড যে মহান সাহিত্যিক ঐতিহের অধিকারী, তাহার গৌরব কোনকালেই সহজে ম্লান হবে না।[৩]

ইংরেজি সাহিত্য, রোমান্টিকতাবাদ

রোমান্টিকতাবাদ বা রোমান্টিসিজম (ইংরেজি: Romanticism) বা রোম্যান্টিক যুগ ছিল একটি শৈল্পিক, সাহিত্যিক, সাংগীতিক এবং মনীষাগত আন্দোলন যা অষ্টাদশ শতকের শেষের দিকে ইউরোপে উদ্ভূত হয়েছিল এবং বেশিরভাগ অঞ্চলগুলিতে আনুমানিক ১৮০০ থেকে ১৮৯০ সাল পর্যন্ত সময়ে শীর্ষে ছিল। রোমান্টিকতাবাদ আবেগ এবং ব্যক্তিত্ববাদের উপর জোর দেওয়ার সাথে সাথে সমস্ত অতীতচারিতা ও প্রকৃতির গৌরব দ্বারা চিহ্নিত হয়েছিল, যা ধ্রুপদী যুগের চেয়ে সামন্তবাদী বৈশিষ্ট্যকে বেশি পছন্দ করেছিল।

অষ্টাদশ শতকে ইংরেজি সাহিত্যে প্রচলিত সাহিত্যতত্ত্ব তথা রীতির বিরুদ্ধে দ্রোহ, নিসর্গ প্রেম, দরিদ্র ও নিপীড়িত মানবাত্মার প্রতি সহানুভূতি, অতিপ্রাকৃতের প্রতি আগ্রহ ইত্যাদি বৈশিষ্ট্যগুলি এক বৃহত্তর সাহিত্য-আন্দোলনের দিকে অঙ্গুলি সংকেত করছিলো যা পরে চিহ্নিত হয়েছিল রোমান্টিকতাবাদ নামে।[৪]

তথ্যসূত্র:

১. এনসাইক্লোপিডিয়া ব্রিটানিকা, The Editors of Encyclopaedia Britannica, ১৯৯৮, অনলাইন ভার্সন লিংক: https://www.britannica.com/art/English-literature/
২. সাবিদিন ইব্রাহিম, আদর্শ প্রকাশনী, প্রথম প্রকাশ ফেব্রুয়ারি, ২০১৬, ঢাকা, ভূমিকা, পৃষ্ঠা ১২।
৩. কুমার বন্দ্যোপাধ্যায়, ওরিয়েন্ট বুক কোম্পানি, কলকাতা, তৃতীয় সংস্করণ, ডিসেম্বর ১৯৬৭, পৃষ্ঠা ২৯০।
৪. কুন্তল চট্টোপাধ্যায়, ইংরাজী সাহিত্যের ইতিহাস, রত্নাবলী, কলকাতা, দ্বিতীয় সংস্করণ জানুয়ারি ১৯৫৯, পৃষ্ঠা ১৭

রচনাকাল: ১৭ জুন ২০২০, দক্ষিণখান, ঢাকা।

Leave a Comment

error: Content is protected !!