ব্রিটিশ উপনিবেশিকদের বিরুদ্ধে বাংলা অঞ্চলের বিভিন্ন ধর্মীয় ও সম্প্রদায়ের সশস্ত্র স্বাধীনতা আকাঙ্ক্ষী মানুষজন বিভিন্ন প্রতিরোধ আন্দোলন ও বিদ্রোহ করেন। এসব আন্দোলনের যেমন সাফল্য ও কৃষিকে রক্ষা ও স্বাধীনতা উদ্ধারের চেষ্টা আছে তেমনি আছে রাজনৈতিক চিন্তা ও যুদ্ধের জন্য প্রয়োজনীয় উপকরণগত পশ্চাৎপদতা। আমরা নিচে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করছি।
প্রাক-বৃটিশ বাংলার রাষ্ট্র শাসনকার্যে ধর্ম এক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এর গুরুত্বের কথা বিবেচনা করে বৃটিশপূর্ব সব সরকার জনগণের সকল ধর্মকে সম্মান প্রদর্শন করে। তখন সরকার শুধুমাত্র বহু ধর্মের উপস্থিতিকেই সহ্য করে নি, উপরন্তু উদারতার সাথে রাষ্ট্রীয়ভাবে তাদের প্রতিষ্ঠানসমূহকে সহায়তা প্রদান করে। বিদেশী শাসকদের জন্য এটি ছিল ধর্মীয় গোষ্ঠীসমূহকে তুষ্ট রাখার রাজনৈতিক কৌশল। কিন্তু পশ্চিমা, খ্রিস্টান ও মুনাফাকেন্দ্রিক কোম্পানি সরকার স্থানীয় ধর্মকে সম্মান প্রদর্শনের কোনো প্রয়োজনীয়তা অনুভব করে নি।
ফকির-সন্ন্যাসী বিদ্রোহ
সন্ত্রাসী ব্রিটিশ সরকার স্থানীয় ধর্মকে শুধুই কুসংস্কার হিসেবে দেখতো এবং ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান বা ব্যক্তিবর্গকে পৃষ্ঠপোষকতা দানের কোনো রকম বাধ্যবাধকতা তাদের নেই বলে ভাবতো। উদাহরণস্বরূপ বলা যায় যে ফকির, সন্ন্যাসী এবং অন্যান্য ভিক্ষুদেরকে মুষ্টি (musthi) নামে গ্রামীণ গৃহস্থদের প্রদত্ত সাহায্য গ্রহণের অনুমতি দেয়া হতো না।[১] ধর্ম ও শিক্ষার সাথে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিবর্গকে মাদাদ-ই-মাআশ অনুদান প্রদানের রীতি রহিত করে দেয়া হয়। একইভাবে ধর্মীয় স্থান (shrine), মন্দির ও মসজিদের জন্য রাষ্ট্রীয় অনুদানও বন্ধ করে দেয়া হয়। এমনকি ফকির ও সন্ন্যাসীগণকে সদলবলে ত্রিশূল, শিকল ইত্যাদি সহকারে গ্রামাঞ্চলে অবাধে ঘুরে বেড়ানোর অনুমতি দেয়া হতো না। ভ্রমণরত ভিক্ষুদেরকে প্রায়শই চুরি ও ছিনতাইয়ের দায়ে অভিযুক্ত করা হতো। এ পরিপ্রেক্ষিতে ধর্মীয় গোষ্ঠী ও প্রতিষ্ঠানসমূহ স্পষ্টত ক্ষুব্ধ হয় এবং নতুন সরকারের অনুসৃত নীতির কারণে সরকারের বিরুদ্ধে তাদের তীব্র প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে। তারা কোম্পানি সরকারকে তাদের বৈধ শাসক হিসেবে মানতে অস্বীকার করে এবং শুরু থেকেই প্রতিরোধ সংগঠিত করতে থাকে।
সর্বপ্রথম এবং সর্বাধিক সংগঠিত বিদ্রোহ গড়ে তুলেন ফকির মজনু শাহ। তিনি ফকিরদের মাদারীয়া অংশের বুরহানা সম্প্রদায়ভুক্ত ছিলেন। ফকিরদের সদর খানকাহ্ ছিল বিহারের কানপুর জেলার মাখনপুরে। উত্তর বঙ্গের জেলাগুলোতে ছিল মজনু শাহের নিজস্ব মুরীদদের এক বিশাল নেটওয়ার্ক। এঁরা দেশের সকল স্থানে ফিরিঙ্গিদের বিরুদ্ধে সর্বাত্মক প্রতিরোধ গড়ে তোলার জন্য মজনু শাহের নিকট থেকে নির্দেশ লাভ করতেন। যদিও ফকির প্রতিরোধ ১৭৬০ সালে শুরু হয়, তবে ১৭৭০-এর দশকের শুরুতে তা সাংগঠনিক দৃঢ়তা লাভ করে এবং ১৭৮০-এর দশকের শেষাবধি সক্রিয় থাকে। এই আন্দোলন দুর্বল হয়ে পড়ে যখন এর নেতা কোম্পানি বাহিনীর সাথে সংঘর্ষকালে সম্ভবত ১৭৮৭ সালে নিহত হন।
১৭৮৪ সালে ফকিরগণ মজনু শাহের ভ্রাতা মুসা শাহের নেতৃত্বে ময়মনসিংহ, জাফরশাহী ও শেরপুর পরগনা দখল করে নেন।[২] তাদেরকে এই পরগনাগুলো থেকে বহিষ্কারের জন্য কালেক্টরগণ ঢাকা থেকে সৈন্যবাহিনী প্রেরণ করেন। কিন্তু ফকিরগণ শীঘ্রই গেরিলা কৌশল অবলম্বন করে নিরাপদ স্থানে পশ্চাদপসরণ করেন এবং উক্ত পরগনা থেকে সৈন্যবাহিনী চলে যাওয়া মাত্র তারা ফিরে আসেন এবং তাদের বৈধ শাসক হিসেবে বৃটিশদের স্বীকার না করার জন্য জনগণকে প্ররোচিত করেন। ১৭৮৪ সালে মজনু শাহ স্বয়ং বাংলার প্রতিরোধ আন্দোলনে নেতৃত্ব দেন। তাঁর সম্পর্কে কলকাতা সরকার ঢাকার চীফের নিকট লেখে, “আমরা গোয়েন্দা সূত্রে খবর পেয়েছি যে মজনু শাহ সৈন্যবাহিনীসহ সিলবারিস জেলায় প্রবেশ করেছে এবং আশা করছি যে আপনার জেলাকে তার ধ্বংসের হাত থেকে রক্ষার জন্য দেশে ছড়িয়ে থাকা সিপাহিদের একত্র করে এবং যুদ্ধের জন্য মোতায়েন করে আপনি যতদুর সম্ভব তাৎক্ষণিক ব্যবস্থাদি গ্রহণ করবেন … … ”[৩] ফকিরদের উৎখাতের জন্য সৈন্যবাহিনী পাঠানো হয়েছিল, কিন্তু তাদেরকে কদাচিৎ চিহ্নিত করা গেছে। স্থানীয় জনগণের সহায়তায় ফকিরগণ সর্বদাই সরকারি বাহিনীর সাথে সরাসরি সংঘর্ষ এড়িয়ে যেতে সক্ষম হন। ফকিরবাহিনীর হয়রানি কৌশল এমন গুরুতর পর্যায়ে পৌছায় যে কোম্পানির বাহিনী মোতায়েন থাকাকালে বাইরে থেকে গ্রামাঞ্চলকে কোম্পানি নিয়ন্ত্রিত মনে হতো, কিন্তু এ বাহিনী প্রত্যাহৃত হলে কার্যত তা ফকিরদের নিয়ন্ত্রণে চলে যেতো। এ অবস্থার সাথে কার্যকরীভাবে মোকাবেলা করার জন্য কলকাতা সরকার এর গুপ্ত গোয়েন্দা বিভাগকে আরো সক্রিয় করার এবং সরাসরি গভর্নর জেনারেলকে দাপ্তরিক কর্মকাণ্ড ও পরিস্থিতি সম্পর্কে অবহিত করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে। ঐ সিদ্ধান্তে উল্লেখ করা হয়:
কাউন্সিলসহ গভর্নর জেনারেলের অভিমত এই যে মজনু শ [মজনু শাহ] এবং তার অনুগতদের আক্রমণ ও ক্ষতি থেকে দেশকে রক্ষার জন্য এ যাবৎ গহীত পদক্ষেপের চেয়ে আরো কার্যকরী ব্যবস্থা গ্রহণ করা উচিত। অতএব তার এবং তার প্রধান সহযোগীদের সম্ভাব্য গ্রেফতার নিশ্চিত করার উদ্দেশ্যে তাকে অনুসরণ, তার আস্তানা ও গতিবিধি চিহ্নিতকরণ এবং কিভাবে তিনি জীবন যাপন করেন তা জানার জন্য গুপ্তচর নিয়োগ করতে আপনাকে নির্দেশ দেয়া হচ্ছে … এ বিষয়ে গভর্নর জেনারেল ও পরিষদের অবগতির জন্য আপনি শুধুমাত্র আমার সাথে যোগাযোগ করুন।[৪]
১৭৮৮ সালের শুরু থেকে ফকির বিদ্রোহ সম্পর্কিত যথেষ্ট তথ্য আমাদের কাছে নেই। ধারণা করা হয় যে মজনু শাহ ১৭৮৭ অথবা ১৭৮৮ সালের কোনো এক সময় মৃত্যুবরণ করেন। তাঁর মৃত্যুর পর বুরহানা ফকির প্রতিরোধ আন্দোলন ক্রমান্বয়ে স্তিমিত হয়ে আসে। শেষ প্রতিরোধটি ঘটে ১৭৯৯ সালে যখন শাহ বাহারপুর নামে এক ব্যক্তি বৃটিশদের থেকে স্বাধীনতা ঘোষণা করেন এবং নিজেকে হিন্দুস্থানের রাজা হিসেবে আখ্যায়িত করেন।[৫]
ফকিরদের স্বাধীনতা ঘোষণা ১৭৮০ এবং ৯০-এর দশকে সম্ভবত এক রীতি (fashion) হয়ে দাড়ায়। কুমিল্লা জেলার কালু ফকির, যাকে বিভিন্ন পরিচয়ে, যেমন হুল্লি ফকির, হাল্লা ফকির এবং আল্লাহ ফকির নামে ডাকা হতো, সেই ব্যক্তি কৃষক, জোতদার, তালুকদার ও জমিদারদেরকে তার অধীনে সংগঠিত করেন এবং বৃটিশদের বিরুদ্ধে স্বাধীনতা ঘোষণা করেন। তিনি তার অনুগত প্রজা হিসেবে থাকার বিনিময়ে জনগণের কাছ থেকে খাজনা দাবি করেন।[৬] ১৭৯২ সালে বরিশালের বলাকী শাহ রায়তদের স্বার্থ তুলে ধরেন এবং জীয়ন নামে এক পরামর্শদাতাকে ‘সুলতান’ হিসেবে নিয়োগ করে স্বাধীনতা ঘোষণা করেন।
ঢাকা জেলা কালেক্টরের (বরিশাল তখন ঢাকা জেলার অংশ ছিল) প্রতিবেদন অনুযায়ী “বলাকী শাহ নামে এক ব্যক্তি এক সৈন্যবাহিনী গড়ে তোলেন এবং কতিপয় পরগনায় জমিদারদের আটক করে…এবং রাজস্ব আদায় করে ব্যাপক বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করেন।”[৭] এক সরকারি গোয়েন্দা প্রতিবেদন থেকে তার বিদ্রোহের প্রকৃতি সম্পর্কে বর্ণনা পাওয়া যায়। এই প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয় যে ঐ ফকির তার পক্ষে যুদ্ধ করার জন্য কয়েক হাজার সশস্ত্র লোক সংগ্রহ করেন এবং সালিমাবাদ, নাজিরপুর ও চন্দ্রদ্বীপ পরগনার সকল জমিদারকে বৃটিশদের পরিত্যাগ করতে এবং তাঁকে প্রধান বা চীফ হিসেবে স্বীকৃতি দিতে বাধ্য করেন। প্রতিবেদনে আরো উল্লেখ করা হয় যে “ঐ ফকির ঢোল বাজিয়ে ঘোষণা করেন যে ফিরিঙ্গিদের শাসন শেষ হয়েছে ও তারা পালিয়ে গেছে এবং যদি কেউ ভবিষ্যতে ফিরিঙ্গিদের খাজনা দেয়, তবে তাকে কঠোর শাস্তি প্রদান করা হবে।”[৮] বলাকী শাহের নিয়ন্ত্রণাধীন সকল পরগনায় বৃটিশ শাসনের শুরুতে বৃদ্ধিকৃত সকল কর বিলুপ্ত করা হয়। রাজস্বের হার হ্রাস করে বলাকী শাহ ঘোষণা করেন যে প্রতি কানি (প্রায় এক একর) জমির জন্য দুই রূপী খাজনা নেয়া হবে; কেউ তার অধিক নিয়ে থাকলে ফেরত দিতে হবে, অন্যথায় তাকে জরিমানা করা হবে।”[৯]।
দুঃসাহসী বলাকী শাহকে দমন করার জন্য ইউরোপীয় কর্মকর্তাদের দ্বারা পরিচালিত এক শক্তিশালী সিপাহি বাহিনী প্রেরিত হয়। বলাকী শাহের মাটির দুর্গে (mud fort) আক্রমণ চালিয়ে তাকে বন্দি করা হয়। ঢাকার নিজামত আদালত তাঁকে বিদ্রোহ ও রক্তপাতের দায়ে অপরাধী সাব্যস্ত করে এবং সাত বছরের কারাদণ্ড প্রদান করে।[১০]
আমরা বৃটিশ শাসন বিরোধী ধর্মীয় গোষ্ঠীর আরো অনেক আন্দোলন ও প্রতিরোধের উদাহরণ দিতে পারি। এসব স্থানীয় প্রতিরোধ ইঙ্গিত দেয় যে জনগণ, বিশেষ করে ধর্মীয় গোষ্ঠীসমূহ, যারা সাধারণ রায়ত হিসেবে ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল, তারা নতুন সরকারকে সামগ্রিকভাবে মেনে নেয় নি। তাই রায়তদের সমর্থনে তারা তথাকথিত স্বাধীনতা ঘোষণা করে তাদের প্রতিবাদ ব্যক্ত করে। স্থানীয় পর্যায়ে তাদের স্বাধীনতা জনগণের সত্যিকার জাতীয়তাবাদী চেতনার ইঙ্গিত দেয় না, বরং ঔপনিবেশিক শাসনের ত্রুটিপূর্ণ প্রকৃতির ইঙ্গিত দেয়। নতুন ঔপনিবেশিক রাষ্ট্রের গঠনপ্রক্রিয়ায় শাসকের বিধি-বিধান তাঁর কর্মচারীগণ আসার পূর্বেই পল্লী অঞ্চলে পৌঁছে যেতো। প্রতিরোধকারী জনগণ নতুন শাসকদের সম্পর্কে শুনে থাকলেও তাদেরকে কদাচিৎ চোখে দেখেছিল। এজন্য সহজেই প্রতিরোধ গড়ে তোলা সম্ভব হয়। এক কথায়, গ্রামাঞ্চলের মানুষ নতুন শাসকদের অধীনে সুখী ছিল না, তাই নতুন অত্যাচারী শাসকদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধে যিনি এগিয়ে আসতেন তাকেই তারা সহযোগিতা প্রদান করতে প্রস্তুত থাকতো।
ধর্মীয় স্বতঃস্ফূর্ত ও বিচ্ছিন্ন স্থানীয় প্রতিরোধ আন্দোলন ঊনবিংশ শতাব্দীর শুরুতে শেষ হয়ে যায়, যখন ঔপনিবেশিক রাষ্ট্রগঠন পূর্ণতায় পৌঁছে এবং রাজনৈতিক ও প্রশাসনিকভাবে রাষ্ট্রীয় নিয়ন্ত্রণ দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে অনুপ্রবেশ করে। সমাজের শিক্ষিত ও সচেতন শ্রেণি হিসেবে ধর্মীয় গোষ্ঠীসমূহ ঔপনিবেশিক রাষ্ট্রকে বাস্তবতার নিরিখে ব্যাখ্যা করতে শুরু করে এবং নতুন শাসক গোষ্ঠীর সাথে সমঝোতায় আসে, যদিও ময়মনসিংহের শেরপুরের ন্যায় প্রত্যন্ত অঞ্চলে তখনো ঔপনিবেশিক কর্তৃত্বের অনুপ্রবেশ ঘটে নি, যেখানে পুরনো কায়দায় ধর্মীয় প্রতিরোধ লক্ষ্য করা গেছে।
শেরপুর ও সুসং পরগনায় টিপু শাহ ও তাঁর আদিবাসী অনুসারীগণ নতুন শাসকের ভূমি নীতি মেনে নিতে অস্বীকার করে এবং প্রথমে ১৮২৪ ও পরে ১৮৩৩ সালে বিদ্রোহ ঘোষণা করে। টিপু ও তার অনেক অনুসারীকে বন্দি করে শান্তি প্রতিষ্ঠা করা হয়।[১১]] তিতুমীর, শরিয়তউল্লাহ ও দুদু মিয়ার সাথেও নতুন শাসক ও তার স্থানীয় প্রতিনিধি জমিদারদের সংঘর্ষ হয়। কিন্তু তাঁদের বিদ্রোহের এক নতুন মাত্রা ছিল। ঔপনিবেশিক শাসকের সাথে তাদের দ্বন্দ্ব ইসলামী সংস্কার আন্দোলনের কারণে ঘটে, প্রত্যক্ষভাবে স্বার্থের সংঘাতের কারণে নয়। এভাবে সংস্কারবাদী ও রক্ষণশীলদের মধ্যে সংঘর্ষ বাধে। জমিদারগণ ও সরকার আইন-শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠায় হস্তক্ষেপ করে এবং ফলশ্রুতিতে কর্তৃপক্ষের সাথে সংঘর্ষ দেখা দেয়। তথাকথিত ওহাবী আন্দোলন ব্যর্থ হওয়ার সাথে সাথে ধর্মীয় গোষ্ঠী দ্বারা ঔপনিবেশিক শাসনের বিরুদ্ধে পরিচালিত বিদ্রোহের পরিসমাপ্তি ঘটে।[১২]
তথ্যসূত্র ও টিকা
১. রন্ধনকালে গৃহিনীরা রান্নার পাত্র থেকে ভিখারিদের জন্য একমুঠো চাল তুলে রাখতো। ঐ ভিক্ষার চাল সংগ্রহের জন্য ভিখারিরা প্রতিটি বাড়িতে বিভিন্ন সময় পর পর যেতো। গৃহিনীকুল ও কৃষকগণ জমির উর্বরতাবৃদ্ধি, রোগমুক্তি ও মৃত্যু পরিহারের সহায়ক মনে করে উক্ত মুষ্টির চালকে বিশেষ গুরুত্ব প্রদান করতো।
২. ফকির প্রতিরোধ আন্দোলনের উপর তথ্যসমৃদ্ধ আলোচনার জন্য দ্রষ্টব্য, Jamini Mohan Ghosh, Sannyasi and Fukır Raiders in Bengal (Calcutta 1930), Mymensingh Collector to Dacca Chicf, 5 February 1784; এটি সিরাজুল ইসলাম সম্পাদিত Bangladesh District Records: Dacca District (1784-1787), vol.1 (Dhaka 1981)-এর অন্তর্ভুক্ত, 61
৩. Government to Chief of Dhaka, October 18, 1784.ঐ, 100.
৪. Secretary of the Council to Mathew Day. Collector of Dhaka, 7 December 1787. ঐ, 423-24.
৫. Bengal Criminal and Judicial Consultations. 23 April 1801, No. 25.
৬. Collector of Tipperah to Chief of Dhaka, April 24, 1787; in Sirajul Islam (ed.), Dacca, 304-10
৭. Bengal Revenue Consultations, 10 February 1792, No 6
৮. ঐ।
৯. ঐ।
১০. Bengal Revenue Consultations (Judicial), 10 May 1792.
১১. টিপুর বিদ্রোহের বিস্তারিত বিবরণ দ্র., Willem Van Schendel, “Pagalpanthi Rebellion of Mymensingh (Bangla)”; এটি সৈয়দ আনোয়ার হোসেন ও মুন্তাসির মামুন সম্পাদিত বাংলাদেশে সশস্ত্র প্রতিরোধ আন্দোলন (ঢাকা, ১৯৮৬) গ্রন্থের অন্তর্ভুক্ত, পৃষ্ঠা ৭৪।
১২. সিরাজুল ইসলাম, “অষ্টাদশ ও উনবিংশ শতাব্দীতে প্রতিরোধ আন্দোলন ও বিদ্রোহ”, বাংলাদেশের ইতিহাস ১৭০৪-১৯৭১, প্রথম খণ্ড, রাজনৈতিক ইতিহাস, মিত্র ও ঘোষ পাবলিশার্স প্রা. লি. কলকাতা, ডিসেম্বর ১৯৯৩, পৃষ্ঠা ১৪১-১৪৪
অনুপ সাদি বাংলাদেশের একজন লেখক ও গবেষক। তাঁর লেখা ও সম্পাদিত গ্রন্থের সংখ্যা এগারটি। ২০০৪ সালে কবিতা গ্রন্থ প্রকাশের মাধ্যমে তিনি পাঠকের সামনে আবির্ভূত হন। ‘সমাজতন্ত্র’ ও ‘মার্কসবাদ’ তাঁর দুটি পাঠকপ্রিয় প্রবন্ধ গ্রন্থ। সাহিত্য ও রাজনীতি বিষয়ে চিন্তাশীল গবেষণামূলক লেখা তাঁর আগ্রহের বিষয়।