চীনা গৃহযুদ্ধ চীনের কুওমিনতাং ও কমিউনিস্ট পার্টির মধ্যে চলা গৃহযুদ্ধ

চীনা গৃহযুদ্ধ বা চীনের গৃহযুদ্ধ (ইংরেজি: Chinese Civil War) ছিল চীনের একটি গৃহযুদ্ধ যা কুয়োমিনতাং বা কুওমিনতাং (কেএমটি) নেতৃত্বাধীন চীন প্রজাতন্ত্রের সরকার (আরওসি) এবং চীনের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিসি) -এর মধ্যে ১৯২৭ থেকে ১৯৪৯ সালের মধ্যে স্থায়ীভাবে লড়াই হয়েছিল। যদিও ১৯৪৫ থেকে ১৯৪৯ সাল পর্যন্ত চার বছরের লড়াইয়ের দিকে বিশেষ মনোযোগ দেওয়া হয়েছে, যুদ্ধটি ১৯২৭ সালের আগস্টে উত্তর অভিযানের সময় কেএমটি-সিপিসি জোট ভেঙে যাওয়ার পরে শুরু হয়েছিল।[১]

চীনা গৃহযুদ্ধ দুটি পর্যায়ে সংঘটিত হয়েছিল, প্রথমটি ১৯২৭ এবং ১৯৩৭ সালের মধ্যে এবং দ্বিতীয়টি ১৯৪৬ থেকে ১৯৫০ পর্যন্ত। ১৯৩৭ থেকে ১৯৪৫ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত দ্বিতীয় চীন-জাপান যুদ্ধ ছিল একটি বিরতি যাতে উভয় পক্ষই জাপানের আগ্রাসি বাহিনীর বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ হয়েছিল।

১৯২৭-১৯৩৬ খ্রিস্টাব্দের বিপ্লবী গৃহযুদ্ধের কারণ

১৯২৭-১৯৩৬ খ্রিস্টাব্দের বিপ্লবী গৃহযুদ্ধের কারণ ছিল আমলাতান্ত্রিক পুঁজিবাদ। চিয়াং কাইশেক জাতীয় বুর্জোয়াদের প্রতিনিধি ছিলেন না। তিনি ছিলেন সাম্রাজ্যবাদ, সামন্তবাদ এবং মুৎসুদ্দি বুর্জোয়াদের প্রতিনিধি। তাঁর কার্যাবলির ফলেই বিকশিত হয় আমলাতান্ত্রিক পুঁজিবাদ (Bureaucratic capitalism)। আমলাতান্ত্রিক পুঁজিবাদের অর্থ হলো মুৎসুদ্দি (comprador), সামন্তবাদী, সামরিক এবং একচেটিয়া পুঁজিবাদ। চিয়াং কাইশেকের নীতির ফলে জাতীয় বুর্জোয়াদের দুর্গতি বেড়েছিল। এই পরিপ্রেক্ষিতেই ১৯৩১-১৯৩৭ কালপর্বে জাপান সুযোগ পেয়েছিল চিনের বিরুদ্ধে ব্যাপক সামরিক আক্রমণের।

চীনা গৃহযুদ্ধ এবং তার সময়রেখা

শরৎকালীন শস্য অভ্যুত্থান

১৯২৭ খ্রিস্টাব্দের ৭ আগস্ট চিনের কমিউনিস্ট পার্টি একটি সম্মেলনে কৃষক অভ্যুত্থানের আহ্বান জানায়। সম্মেলনের পর মাও সেতুং কিআংসি প্রদেশের পশ্চিমে এবং হুনান প্রদেশের পূর্বে নানা স্থানে কৃষক, শ্রমিক এবং উত্তরমুখী অভিযানের সময় সেনাদের নিয়ে অভুত্থানের আয়োজন করেন। হুনান এবং কিআংসি প্রদেশের সীমান্তে মাও সংগঠিত করেন শ্রমিক এবং কৃষক বাহিনী।

১৯৩৭ খ্রিস্টাব্দের শরৎকাল ও শীতকাল থেকে শুরু করে ১৯২৮ খ্রিস্টাব্দের বসন্ত কাল পর্যন্ত কমিউনিস্ট পার্টি পূর্ব হুপে, পূর্ব এবং দক্ষিণ হুনান, ক্যানটন নগর, পূর্ব কুআংতুং, হাইনান দ্বীপ এবং অন্যান্য স্থানে সশস্ত্র অভ্যুত্থানে সক্রিয় হয়। দক্ষিণ হুনান-এ অভ্যুত্থানে নেতৃত্ব দেন চু তে, ছন ই, লিন পিয়াও এবং আরও অনেকে।

চিংকাং পাহাড়ের সংগ্রাম

১৯২৭ সালের অক্টোবর মাসে চিংকাং পার্বত্য অঞ্চলে মাও সেতুং তার নবগঠিত সেনাবাহিনীকে স্থানান্তরিত করলেন। এই সেনাবাহিনী ছিল শ্রমিক ও কৃষকের বিপ্লবী সেনাবাহিনী। চিংকাং পার্বত্য অঞ্চল কিআংসি ও হুনান প্রদেশের সীমান্তে অবস্থিত। তিনি প্রতিষ্ঠিত করলেন হুনান-কিআংসি সীমান্ত অঞ্চলে শ্রমিক ও কৃষকের সরকার। শত্রু বাহিনীর আক্রমণ প্রতিহত করলেন। শুরু করলেন কৃষকদের মধ্যে জমি বণ্টন কর্মসূচি।

বিপ্লবী ঘাঁটি এলাকা

১৯২৭-১৯২৯ কালপর্বে কমিউনিস্ট পার্টির নেতৃত্বে কৃষকদের গেরিলা যুদ্ধ এবং জমির জন্য সংগ্রাম ছড়িয়ে পড়ল কিআংসি, ফুকিএন, হুনান, হুপে, কুআংসি এবং অন্যান্য প্রদেশে। লালফৌজের বেশ কয়েকটি শাখা এবং নতুন কয়েকটি বিপ্লবী ঘাঁটি একের পর এক গঠন করা হলো। ১৯২৯ সালে মাও সেতুং এবং চু তে-এর নেতৃত্বে লালফৌজ কিআংসির দক্ষিণে এবং ফুকিএন প্রদেশের পশ্চিমে এগিয়ে গেল। চুইআইচিন-এ (কিআংসিতে অবস্থিত) তাদের কর্মক্ষেত্রের কেন্দ্র হিসাবে গড়ে তুললেন কেন্দ্রীয় বিপ্লবী ঘাঁটি।

লালফৌজের জয়যাত্রা 

১৯৩০ খ্রিস্টাব্দে সমগ্র চিন জুড়ে লালফৌজের সংখ্যা ছিল ষাট হাজার। এর মধ্যে ত্রিশ হাজার ছিল কিআংসি প্রদেশের মধ্যাঞ্চলে। ১৯৩০ খ্রিস্টাব্দে এবং তার কিছু পরে বিপ্লবী ঘাঁটিগুলি প্রসারিত হলো ফুকিএন, আনউএই, হোনন, শেনসি, কানসু, ও অন্যান্য প্রদেশে এবং হাইনআন দ্বীপ ও কোআংতুং প্রদেশে। চিআং কাইশেক ভীত হয়ে পড়লেন।

১৯৩০ খ্রিস্টাব্দের শেষের দিকে চিআং এক লক্ষ সেনার সাত ডিভিশন সৈন্য পাঠালেন লালফৌজকে ধ্বংস করার জন্য। লালফৌজের আক্রমণে চিআংএর দেড় ডিভিশন সেনা নিশ্চিহ্ন হয়ে গেল। ১৯৩২ সালের ফ্রেব্রুয়ারি মাসে চিআং পুনরায় দুই লক্ষ সেনা পাঠালেন। তার সেনাপতি ছিলেন হো ইং-চিং। এই অভিযানও ব্যর্থ হয়। লালফৌজ দখল করে চিআং-এর ত্রিশ হাজার সেনা ও বিশ হাজার ছোটো-ছোটো অস্ত্রশস্ত্র।

ওই বছরেই জুলাই মাসে চিআং শুরু করেন তৃতীয় অভিযান। ব্রিটিশ, জাপানি এবং জার্মান সামরিক উপদেষ্টাদের সঙ্গে নিয়ে স্বয়ং চিআং-এর তিন লক্ষ সেনা তিন দিক থেকে মধ্যাঞ্চলের লালফৌজকে আক্রমণ করে। এক্ষেত্রেও লালফৌজ আক্রমণ প্রতিহত করে। শ্যুই শিআং-চিএন-এর নেতৃত্বে লালফৌজের একটি বাহিনী হুপে-হোনান-আনউএই ঘাঁটিতে ছিল। পরে সেই বাহিনী উত্তর ছিচুআন ঘাঁটিতে স্থানান্তরিত হয়। হোলং-এর নেতৃত্বে আর একটি লালফৌজ বাহিনী পশ্চিম হুনান এবং পশ্চিম হুপে ঘাঁটিতে অবস্থান করছিল। শ্যুই শিআং চিএন এবং হোলং-এর নেতৃত্বাধীন দুটি লালফৌজ বাহিনীই বেশ কয়েকটি যুদ্ধে জয়ী হয়।

লালফৌজের অতুলনীয় বিজয়ে শঙ্কাতুর হয় কুঅমিনতাং সেনাবাহিনী। ১৯৩১ সালের ডিসেম্বরে কুঅমিনতাং ছাব্বিশ নং রুট আর্মির দশ হাজার সেনা বিদ্রোহ ঘোষণা করে কিআংসি প্রদেশের নিংতু অঞ্চলে। চাও প’ষং এবং তুং চীন তাং-এর নেতৃত্বে তারা যোগ দেয় লালফৌজ বাহিনীতে। লালফৌজের প্রভাব প্রতিপত্তি বেড়েই চলে।

জাপানের সাম্রাজ্যবাদী আগ্রাসন

উত্তর-পূর্ব চিনে জাপানের সাম্রাজ্যবাদী আগ্রাসন শুরু হয় ১৯৩১ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর। ১৯২৯ সালে ধনতান্ত্রিক দেশগুলি অর্থনৈতিক সংকটে বিপর্যস্ত হয়। ব্রিটেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও অন্যান্য সাম্রাজ্যবাদী দেশগুলি অভ্যন্তরীণ সমস্যায় জর্জরিত ছিল। চিনে সাম্রাজ্য বিস্তারের প্রশ্নে জাপানের প্রতিদ্বন্দ্বিতা তারা করেনি। পশ্চিমি সাম্রাজ্যবাদের কাছে চিআং কাই-শেক সম্পূর্ণভাবে আত্মসমর্পণ করেছিল। জাপানের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে চিআংও সে সময় আগ্রহী ছিলেন না। ১৯৩১ সালে জাপান দখল করে চিনের সমগ্র উত্তর-পূর্ব অঞ্চল। ১৯৩২ সালের জানুয়ারি মাসে জাপান সাংহাই আক্রমণ করে। ১৯৩৩ সালে জাপান জেহোল প্রদেশ এবং চাহার প্রদেশের উত্তরাংশ অধিকার করে। হোপেই প্রদেশের পূর্বাংশ জাপানের অধিকারে আসে ১৯৩৫ সালে।

চিনে পরিস্থিতির মৌলিক পরিবর্তন

জাপানি আক্রমণের ফলে চিনের রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে মৌলিক পরিবর্তন ঘটে। সমগ্র, চিনাজাতির আশু কর্তব্য এবং একমাত্র লক্ষ্য হলো জাপানি আক্রমণের প্রতিরোধ। শ্রমিক, কৃষক ও ছাত্র আন্দোলন উত্তাল হয়ে উঠল সমগ্র চিন জুড়ে জাপানি সাম্রাজ্যবাদের বিরুদ্ধে। ১৯২৭ সালে বিপ্লবের সময় উদাসীন থেকেছে। পাতি-বুর্জোয়া ও জাতীয় বুর্জোয়া শ্রেণির উচ্চ স্তরের অংশ। এখন তাদের দৃষ্টিকোণ পালটে গেছে। রাজনৈতিক আন্দোলনে সক্রিয় অংশ নিতে তারা আগ্রহী। কুঅমিনতাং সরকারের নীতির পরিবর্তনের দাবিতে তারা সোচ্চার হয়েছেন। কুঅমিনতাং সরকার এবং তার সেনাবাহিনীতে ভাঙন ধরেছে। ১৯৩২ সালের জানুয়ারি মাসে কুঅমিনতাংএর ১৯ নং রুট আর্মি সাংহাই-এ প্রতিরোধ করে জাপানি সেনাবাহিনীকে। ১৯৩৩ সালের নভেম্বর মাসে ১৯ নম্বর রুট আর্মির নেতৃবর্গ ও অন্যান্য কুঅমিনতাং সদস্য ফুকিএন প্রদেশে গঠন করেন জনগণের সরকার। তাঁরা চিআং-এর বিরোধিতা করেন এবং কমিউনিস্টদের সঙ্গে গড়ে তোলেন সহযোগিতার সম্পর্ক।

১৯৩২ সালের জুন থেকে ১৯৩৩ সালের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত চিআং কাই-শেক চিনা শ্রমিক এবং কৃষকের লালফৌজের বিরুদ্ধে চতুর্থ সর্বাঙ্গীণ অভিযান শুরু করেন। এই অভিযানে নব্বই ডিভিশনে বিভক্ত পাঁচ লক্ষ সেনা তিনি নিয়োগ করেন। মাও সে-তুং-এর নেতৃত্বে এই ঘেরাও-অভিযানের বিরুদ্ধেও লালফৌজ বিপুলভাবে জয়ী হয়। ১৯৩৩ সালের অক্টোবর মাসে লালফৌজের বিরুদ্ধে চিআং শুরু করেন পঞ্চম ঘেরাও অভিযান। পঞ্চম অভিযানে তিনি নিযুক্ত করেছিলেন দশ লক্ষ সেনা। এর মধ্যে পাঁচ লক্ষ সেনা আক্রমণ করে কেন্দ্রীয় লালফৌজকে। এক্ষেত্রে লালফৌজ ব্যর্থ হয় কুঅমিনতাং-এর পঞ্চম ঘেরাও-অভিযান ধ্বংস করতে। লালফৌজের ভূমিকা ছিল আত্মরক্ষামূলক। কমিউনিস্ট পার্টির কেন্দ্রীয় নেতৃবর্গের মধ্যেও মতৈক্য ছিল না। ফলশ্রুতিতে ১৯৩৪-৩৫ সালে পশ্চাদপসরণ করতে হয় লাল ফৌজকে যা ইতিহাসে লং মার্চ নামে বিখ্যাত হয়েছে।

লং মার্চের সমাপ্তি, সিয়ান-এর ঘটনা

১৯৩৬ সালের মে মাসে কুঅমিনতাং-এর কাছে চিনের কমিউনিস্ট পার্টি প্রকাশ্যে কয়েকটি প্রস্তাব পাঠায়। গৃহযুদ্ধের অবসান, শান্তি আলোচনা এবং জাপানি সাম্রাজ্যবাদের বিরুদ্ধে যৌথ সংগ্রাম ওই প্রস্তাবে স্থান পেয়েছিল। কিন্তু জাতীয় সরকার জাতীয় মুক্তি পরিষদের বড়ো বড়ো নেতাকে গ্রেফতার করে। জাপবিরোধী সংগঠনগুলির উপর শুরু হয় নির্যাতন। মাঞ্চুরিয়ার শাসনকর্তা মার্শাল চ্যাং সো-লিয়াং লালফৌজের সঙ্গে সন্ধি করেন। চিআং বিমান যোগে ১২ ডিসেম্বর ১৯৩৬ তারিখে পৌছোন চ্যাং সোলিয়াং-এর সদর দপ্তর সিয়ান-এ। চৌ এন-লাই-এর সহৃদয় প্রচেষ্টায় তিনি মুক্তি পান। কমিউনিস্টদের প্রভাব প্রতিপত্তি বেড়ে যায়।

দ্বিতীয় চীন-জাপান যুদ্ধের আরম্ভ

জাপানের সাথে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শেষ হয়ে যাওয়ার পরে চীনে কমিউনিস্ট ও কুয়োমিনতাং-এর মধ্যে চীনা গৃহযুদ্ধ নতুন পর্বে বা দ্বিতীয় পর্বে প্রবেশ করে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সহানুভূতি স্বভাবতই থাকে চিয়াং কাইশেকের কুয়োমিনতাং সরকারের দিকে এবং মার্কিন সরকার চিয়াং কাইশেককে নানা রকম সাহায্য দিয়ে চীনে তাঁর শাসন সুপ্রতিষ্ঠিত করার চেষ্টা করে। কমিউনিস্ট ও কুয়োমিনতাং এই দুই দল মিলে যাতে একটি ঐক্যবদ্ধ সরকার স্থাপন করতে পারে মার্কিন সরকারের পক্ষ থেকে সে চেষ্টাও করা হয়। কিন্তু কুয়োমিনতাংকে বাঁচিয়ে রাখার সব চেষ্টাই ব্যর্থ হয়। চিয়াং কাইশেক সরকারের প্রতি চীনের জনসাধারণের আর কোনো মোহ ছিল না। কমিউনিস্টদেরদের দুর্বার অগ্রগতিতে কুয়োমিনতাং সম্পূর্ণরূপে বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে।[২]

বিশ্বযুদ্ধের একেবারে শেষ পর্যায়ে জাপানের বিরুদ্ধে সোভিয়েত ইউনিয়ন যোগ দেওয়ায় কমিউনিস্টদের আরও সুবিধা হয়ে যায়। শেষ পর্যন্ত ১৯৪৯ খ্রিস্টাব্দের পয়লা অক্টোবর পিকিং-এ কমিউনিস্ট পরিচালিত সরকার স্থাপিত হয় এবং এইভাবে গণপ্রজাতন্ত্রী চীনের (People’s Republic of China) পত্তন ঘটে।

চীনা গৃহযুদ্ধ এবং তার ফলাফল

চীনা গৃহযুদ্ধ এমন এক ফল বয়ে আনে যাতে চীনে একটি বড় বিপ্লব ঘটেছিল, কমিউনিস্টরা মূল ভূখণ্ডের চীনে নিয়ন্ত্রণ লাভ করে এবং ১৯৪৯ সালে গণপ্রজাতন্ত্রী চীন (পিআরসি) প্রতিষ্ঠা করে। অন্যদিকে মার্কিন সহযোগিতায় চিয়াং কাইশেক তাইওয়ান দ্বীপে আশ্রয় গ্রহণ করে সেখানে স্বাধীন এক সরকার গড়ে তোলেন এবং মার্কিন সরকারের পৃষ্ঠপোষকতায় গণপ্রজাতন্ত্রী চীনের বিরুদ্ধাচরণ শুরু করেন। তাইওয়ান জলপ্রণালীর দুই দিকের দু’পক্ষের মধ্যে দীর্ঘস্থায়ী রাজনৈতিক ও সামরিক দূরে সরে থাকার অবস্থান তৈরি হয়েছিল, তাইওয়ানের আরওসি এবং মূল ভূখণ্ডের চীনে পিআরসি উভয়ই সরকারীভাবে সমস্ত চীনকে বৈধ সরকার বলে দাবি করেছে।[৩]

তথ্যসূত্র:

১. অনুপ সাদি, ১ সেপ্টেম্বর ২০১৯, ‘চীনা গৃহযুদ্ধ প্রসঙ্গে’, রোদ্দুরে ডট কম, ঢাকা ইউআরএল: https://www.roddure.com/international/chinese-civil-war/
২. জহর সেন, এ যুগের চিনকথা, মিত্রম, কলকাতা, প্রথম প্রকাশ জুন ২০০৭, পৃষ্ঠা ২৩৭-২৪৫।
৩. গৌরীপদ ভট্টাচার্য, আন্তর্জাতিক সম্পর্ক, পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য পুস্তক পর্ষদ, কলকাতা, পঞ্চম সংস্করণ ডিসেম্বর ১৯৯১, পৃষ্ঠা ৩৫২।

Leave a Comment

error: Content is protected !!