অক্ষয় কুমার সরকার সংস্কৃতিমনা কবিয়াল, বাগ্মী, আয়ূর্বেদ শাস্ত্রে পণ্ডিত

শৈশবকাল হতেই অক্ষয় কুমার সরকার সংগীতের প্রতি অনুরাগী ছিলেন। তাই তিনি কাজের ফাঁকে ফাঁকে সংগীতের প্রতিপাদ্য বিষয়গুলি অনুশীলন শুরু করেন। চান্দুরা গ্রামে তখন কবিগান শিক্ষা দেওয়া হতো। টোল শিক্ষার সাথে সাথে শাস্ত্রীয় ধারায় সংগীতামোদী ব্যক্তিগণ তা আয়ত্ব করতেন। অচিরেই তিনি সেখান হতে শিক্ষা লাভ করে অত্র এলাকার একজন সুপ্রসিদ্ধ কবিয়াল হিসাবে স্বীকৃতি লাভ করেন। কর্ম জীবনের প্রথমেই তিনি বৈদ্য ব্যবসা আরম্ভ করেন। কিন্তু এই ব্যবসায় আশানুরূপ সাফল্য অর্জন করতে না পেরে ১৯৪৭ সনে আঠারবাড়ীর জমিদারের অধীনে কেন্দুয়া উপজেলার সদরস্থ এস্টেটের নায়েব হিসেবে চাকরি গ্রহণ করেন। তদানীন্তন পাকিস্তান সরকার জমিদারী প্রথা উচ্ছেদ করার সংগে সংগে তিনি চাকরিচ্যুত হন। এই সময় তাকে সাময়িক আর্থিক দূরবস্থার সম্মুখীন হতে হয়।

আরো পড়ুন

অক্ষয় কুমার সরকার যৌবনের প্রারম্ভে কবিয়াল হিসাবে বিশেষ খ্যাতি অর্জন করেন। ব্যক্তিগত জীবনে তিনি ছিলেন হাস্য রসিক। তিনি গীতা, মহারামায়ণ, ভজণ ও পৌরাণিক কাহিনীর শ্লোক ও উদাহরণসমূহও আলোচনা করতেন। সংস্কৃত ভাষায় তার পাণ্ডিত্য ছিল। তিনি যাত্রাভিনয়ে একজন ভাল অভিনেতা ছিলেন। ১৯৫৮ সনে ‘চন্দ্রহাস’ পালার যাত্রাভিনয়ে তিনি বিশেষ খ্যাতি অর্জন করেন। ১৯৭১ সালের স্বাধীনতা সংগ্রামে পাক বাহিনী, রাজাকার ও আলবদরের অত্যাচারে তিনি মাতৃভূমি ত্যাগ কররে মেঘালয়ে আশ্রয় গ্রহণ করেন। ঐ বৎসরই অক্টোবরের ৫ তারিখ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়ে মেঘালয়ের মহেশখোলা শরণার্থী শিবিরে অক্ষয় কুমার সরকার শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।[১]

তথ্যসূত্র

১. অনুপ সাদি, দোলন প্রভা, নেত্রকোণা জেলা চরিতকোষ, টাঙ্গন, ঢাকা, প্রথম প্রকাশ, জুন ২০২৪, পৃষ্ঠা ১১।

Leave a Comment

error: Content is protected !!