অখিল চন্দ্র সেন একজন রাজনীতি-সচেতন ও সংস্কৃতিমান ব্যক্তি যিনি পেশায় আইনজীবী ছিলেন। অখিল চন্দ্র সেনের জন্ম ১৮৯৮ সালে বাংলাদেশের নেত্রকোনা জেলার নেত্রকোনা সদর উপজেলার কাইলাটি গ্রামে। তার বাবা আনন্দ কুমার সেন ছিলেন জোতদার। তিন ভাইয়ের মধ্যে তিনি বড়।
অখিল সেন কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক পাস করেন। এরপর ওই প্রতিষ্ঠান থেকেই আইনশাস্ত্রে স্নাতক ডিগ্রি নেন। পাঠপর্ব শেষ করে প্রথমে আইন পেশায় না গিয়ে তিনি গৌরীপুর জমিদারদের অধীনে মোক্তারপাড়ায় অবস্থিত কাচারিতে প্রধান সুপারিনটেনডেন্টে হিসেবে যোগ দেন। এরপর তিনি জনহিতকর কাজে নিয়োজিত হন। দেশভাগের আগে তিনি ময়মনসিংহ জেলা পরিষদের সদস্য নির্বাচিত হন।
১৯৪৬ সাল থেকে ১৯৪৯ সাল পর্যন্ত তিনি নেত্রকোনা পৌরসভার চেয়ারম্যান ছিলেন। এরপর পুরোদমে আইন পেশায় নিয়োজিত হন। এই মানুষটির পেশাদারি খ্যাতি যখন তুঙ্গে তখন শুরু হয় মুক্তিযুদ্ধ।
আরো পড়ুন
- অনিল চন্দ্র তালুকদার ছিলেন সংগীত শিল্পী এবং সংগীত শিক্ষক
- অঞ্জনা রায় একজন সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব
- অছিম উদ্দিন আহম্মদ ছিলেন একজন ভাষা সৈনিক
- অখিলানন্দ স্বামী ছিলেন ধর্মপ্রচারক, সুবক্তা ও সুপণ্ডিত
- অখিল পাল একজন ভাস্কর শিল্পী
- অখিল চন্দ্র সেন রাজনীতি-সচেতন ও সংস্কৃতিমান আইনজীবী
পাকিস্তানপন্থী মুসলিম লীগের চিহ্নিত কয়েকজন নেতা ও রাজাকার একাত্তরের ৭ আগস্ট রাত ১১টার দিকে নেত্রকোনা শহরের মোক্তারপাড়া এলাকার বাসা থেকে অখিল চন্দ্র সেনকে ধরে নিয়ে যায়। তুলে দেয় পাকিস্তানি সেনাদের হাতে। হানাদার সেনারা অমানবিক নির্যাতন করে গভীর রাতে তাকে মোক্তারপাড়া সেতুর ওপর নিয়ে গুলি করে হত্যা করে। মৃতদেহটি ভাসিয়ে দেয় মগড়া নদীতে। স্বজনেরা তার তার দেহটি আর পাননি। ১৯৭১-এর মুক্তিযুদ্ধে এই পরিবারের ৪ জন শহীদ হন।
তথ্যসূত্র
১. অনুপ সাদি, দোলন প্রভা, নেত্রকোণা জেলা চরিতকোষ, টাঙ্গন, ঢাকা, প্রথম প্রকাশ, জুন ২০২৪, পৃষ্ঠা ১১।
অনুপ সাদি বাংলাদেশের একজন লেখক ও গবেষক। তাঁর লেখা ও সম্পাদিত গ্রন্থের সংখ্যা এগারটি। ২০০৪ সালে কবিতা গ্রন্থ প্রকাশের মাধ্যমে তিনি পাঠকের সামনে আবির্ভূত হন। ‘সমাজতন্ত্র’ ও ‘মার্কসবাদ’ তাঁর দুটি পাঠকপ্রিয় প্রবন্ধ গ্রন্থ। সাহিত্য ও রাজনীতি বিষয়ে চিন্তাশীল গবেষণামূলক লেখা তাঁর আগ্রহের বিষয়।